আমরা অনেকেই আলু রান্নার আগে তার খোসা ফেলে দিই। ভাবি এগুলোর আর কোনো দরকার নেই। কিন্তু এই সাধারণ আলুর খোসাই হতে পারে স্বাস্থ্য, সৌন্দর্য ও বাগান পরিচর্যার এক অমূল্য সম্পদ। এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন, ফাইবার, আয়রন, জিংক ও অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, যা শরীর ও ত্বকের পাশাপাশি নানা গৃহস্থালি কাজেও দারুণ কাজে আসে।
আলুর খোসা নানা কাজে ব্যবহার করা যায়-
চুলে প্রাকৃতিক রং ফিরিয়ে আনে
যাদের চুল অকালে সাদা হয়ে যাচ্ছে, তাদের জন্য আলুর খোসা এক অসাধারণ প্রাকৃতিক উপায়।
ব্যবহার পদ্ধতি : কয়েকটি আলুর খোসা পানিতে ফুটিয়ে সেই পানি ঠাণ্ডা হলে চুলে লাগান বা ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহার করলে ধীরে ধীরে চুলের প্রাকৃতিক রং গাঢ় হবে, চুলের উজ্জ্বলতা বাড়বে এবং চুল পড়াও কমবে।
ত্বকের যত্নে
আলুর খোসায় থাকা অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট ত্বককে ফ্রি-র্যাডিক্যাল থেকে রক্ষা করে এবং তারুণ্য ধরে রাখে।
ফেসপ্যাক তৈরির উপায় : আলুর খোসা বেটে তাতে সামান্য মধু মিশিয়ে মুখে লাগান। এই প্রাকৃতিক প্যাক ট্যান দূর করে, দাগ হালকা করে এবং মুখে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনে।
ধাতব জিনিস পালিশে কার্যকর
আলুর খোসায় থাকা স্টার্চ ধাতব পাত্র ও ছুরি পালিশে দারুণ কাজ করে। পাত্রে বা ছুরিতে আলুর খোসা ঘষে ধুয়ে নিন—দাগ দূর হয়ে চকচকে হয়ে উঠবে।
গাছের জন্য প্রাকৃতিক সার
যারা বাড়িতে গাছ লাগাতে ভালোবাসেন, তাদের জন্য আলুর খোসা একদম উপযুক্ত জৈব সার। খোসা শুকিয়ে বা সরাসরি মাটিতে পুঁতে দিলে গাছ প্রয়োজনীয় পটাশিয়াম ও ফসফরাস পায়, যা গাছের দ্রুত বৃদ্ধি ও সবল শিকড় গঠনে সহায়তা করে।
হজম ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
আলুর খোসায় থাকা ফাইবার হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে এবং পেট পরিষ্কার রাখে। এ ছাড়া এতে থাকা পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণেও ভূমিকা রাখে। তবে বাজারের আলু ব্যবহারের আগে অবশ্যই ভালোভাবে ধুয়ে নিন। কারণ খোসায় রাসায়নিক বা মাটি লেগে থাকতে পারে।
সতর্কতা : খোসা ব্যবহার বা খাওয়ার আগে নিশ্চিত হোন যে আলু পচা নয় বা সবুজাভ হয়ে যায়নি। কারণ তাতে সোলানিন নামের এক বিষাক্ত উপাদান তৈরি হয়, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।