পাতাকুড়ানির মেয়ে... তুমি কী কুড়াও? পাতা, আমি পাতা কুড়াই_ কবির এই পাতাকুড়ানির অভাব নেই আমাদের সমাজে। ফুলকুড়ানি, ময়লাকুড়ানি, সেই সঙ্গে আবর্জনায় নিত্যবাস।
রাস্তায় বের হলেই দেখা মেলে তাদের। একটা ফুল কিনেন না_ মাত্র ১০ টাকা। ভাত কিন্যা খামু কিংবা আপা, পাঁচটা টেহা দেন_ কাচঘেরা গাড়ি কিংবা রিকশা যেখানেই থাকুন না কেন বারবার মনে করিয়ে দেয় তারা আছে।
মুসলিম সম্প্রদায়ের বড় খুশির উৎসব ঈদুল আযহা। বছর ঘুরে ঈদ আসে আনন্দ নিয়ে। ঈদ মানেই নতুন পোশাক, পিতার হাত ধরে মসজিদে ঈদগাহে নামাজ পড়তে যাওয়া। নামাজ শেষে ঘরে ফিরে বড়দের থেকে সালামি আদায় করা, ফিন্নি -সেমাই, কোমড়া- পোলাও খাওয়া। স্বজন-বন্ধুদের বাড়ীতে যাওয়া।
অধিকাংশ জীবনের কমবেশি এই দৃশ্য। কিন্তু আশুলিয়ার গৃহহীন রাজপথে বড় হওয়া শিশুদের মাঝে নেই কোন উচ্ছাস। সোমবার নবীনগর ফুটপাতে এমন শিশুরা বলছিল তাদের আক্ষেপের কথা। শিশু আলামিনের ভাষ্য, সারা বছর কখনো পানি বিক্রি করি, কখনো ফুল বিক্রি করে জীবন কাটে আমাদের আবার কিসের ঈদ?
এদের কাছে ঈদ কিংবা আনন্দের কোনও মানে নেই। পেট ভরে দু'বেলা দু'মুঠো খেতে পারলেই এরা খুশি। পথশিশুরাও জানে ঈদ মানে খুশি, ঈদ মানে আনন্দ। ঈদ আসে, ঈদ যায়, কিন্তু সেই ঈদ কখনই তাদের জন্য উৎসব হয়ে ওঠে না।
সাভার ওভারব্রিজের ওপর রাত কাটে সুমনের। ঈদে নতুন জামাকাপড় নিয়েছে কিনা জিজ্ঞাসা করতেই বলে উঠলো, আমাগো আবার কিসের ঈদ। আমাগো তো বাড়ি-ঘরই নাই। দুই বেলা ঠিক করে খাইতে পারি না। আবার ঈদের কেনা-কাটা কিসের। অন্যান্য ঈদে বড়লোক সাহেব আমাগোরে নতুন জামা কাপড় কিন্না দিছে। এবার কিছু পাই নাই।
কখনও আমড়া-পেয়ারা বিক্রি করে আবার মাঝেমধ্যে ভিক্ষাও করে (১০) বছরের শায়লা। সে থাকে জামগড়া। সে ছোট সময় রাজবাড়ীর বোয়ালিয়া গ্রামের বাড়ী থেকে দাদির সাথে গত দুই বছর হয় ঢাকায় এসেছে। শায়লার মন খারাপ কারণ তার দাদি এবার তার জন্য নতুন কোন জামা কিনে দেয়নি।