× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা জামায়াত বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

‘সাবেক সেনাপ্রধান লে. জেনারেল মাহবুবুর রহমানের বর্ণাঢ্য জীবন’

নিজস্ব প্রতিবেদক

০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৮:১৫ পিএম

একজন মানুষ ভালো পরিবেশে জন্মালে, পরিবারের সদস্যারা উন্নত, সদাচারণের সৌহার্দের থাকলে, ছোট এবং শিশুরাও উন্নত চরিত্রের গুণে বড় হয়ে ওঠে। পরিবেশের উন্নত মানববোধে, কঠোর পাঠ্যাভাসে নিজকে স্বশিক্ষিত করলে এবং পরিবেশ, পরিজন, গুরুর কাছে শেখা মানবিকতা তাঁকে যে কতো উন্নত মানুষে পরিণত করে তার একটি প্রোজ্জ্বল দৃষ্টান্ত মাহবুবুর রহমানের বর্ণাঢ্য জীবন। 

সম্প্রতি সাংবাদিক ও বহুভূজ লেখক জামাল উদ্দিন জামালের এই গুণীজন ‘সাবেক সেনাপ্রধান লে. জেনারেল মাহবুবুর রহমানের বর্ণাঢ্য জীবন’ বইটি পড়লে এ সত্যটিই আমাদের ভেতর অনুরণিত হয়। 

১৬০ পৃষ্ঠার বইটির সূচিপত্রে রয়েছে মাহবুবুর রহমানের ছেলেবেলা, মাহবুবুর রহমানের জীবন ও কর্ম, মাহবুবুর রহমানের লেখা দুটি গ্রন্থের পরিচিতি, সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানদের সাথে মাহবুবুর রহমান, বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রধান ও সম্মানিত ব্যক্তিদের সঙ্গে মাহবুবুর রহমান, মাহবুবুর রহমানের সহধর্মিনী অধ্যাপিকা নাগিনা আমিন: একজন বিদুষী নারীর কথা, মাহবুবুর রহমানের সাক্ষাৎকার, মাহবুবুর রহমানের বিশেষ সাক্ষাৎকার, সংবাদপত্রে মাহবুবুর রহমানের লেখা কলাম চীনের অর্থনীতি, দুর্নীতির ফাঁদ পাতা এই দেশে, নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুস, নদীহত্যা ও একজন ভাসানী, সংবাদপত্রে মাহবুবুর রহমানের লেখার প্রামাণ্য চিত্র, বিশিষ্ট ব্যক্তিদের দৃষ্টিতে মাহবুবুর রহমান। মাহবুবুর রহমানের উল্লেখযোগ্য বক্তব্য, সামরিক নেতৃত্বে মাহবুবুর রহমান ও মাহবুবুর রহমানের বিদেশ ভ্রমণ।  

 “প্রত্যেক মানুষের একটি ছেলেবেলা থাকে, চকচকে চাঁদনি রাতের ভরা আলোয় এ ছেলেবেলা। এ ছেলেবেলা অনেক আনন্দের, অনেক চপলতার, চঞ্চলতার। এ ছেলেবেলা স্মৃতিময়, সামান্য আনমনা হলেই সব মানুষের জীবনের ফেলে আসা সেই শৈশবকালের কথা মনে পড়ে।” (পৃ-১১)। এভাবেই সুন্দর সহজ ভাষায় একজন সেনাপ্রধানের জীবনের কঠিন ও একইসাথে কর্তব্যময় এবং কঠোর হাতে দায়িত্ব পালনের কথা বলা শুরু করেন লেখক জামাল উদ্দিন জামাল। অত্যন্ত সম্ভ্রান্ত ঘরের সন্তান মাহবুব গ্রামের কাছেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়া শুরু করেন। তারপর জেলা স্কুল, এর পর ঢাকা কলেজ থেকে মেধা তালিকায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হয়ে বেরিয়ে আসেন। এরপর তিনি আহছানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে (বর্তমান বুয়েট) ভর্তি হয়ে বিএসসি ডিগ্রি নিয়ে এক আত্মীয়ের অনুপ্রেরণায় সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তান থেকে প্রত্যাবাসনের পর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে আসেন।  

 বইটিতে মাহবুবুর রহমানের লেখা সমকালীন ভাবনা ও কিছু স্মৃতি কিছু কথা নামের প্রবন্ধ বইদু’টির কিছু পরিচয় তুলে ধরেছেন লেখক। মাহবুবুর রহমান সাহিত্যিক না হয়েও অনেক মূল্যবান প্রবন্ধ লেখার ক্ষমতা রাখেন, তার স্বাক্ষর রয়েছে বইদু’টিতে। 

“সমাজের নানামুখী সমস্যার কথা, সম্ভাবনার কথা, শ্রমজীবী মানুষের শোষণ-শাসন, নিপীড়ন ও নির্যাতনের কথা সুন্দর করে তুলে ধরেছেন। আমাদের স্বাধীনতার মূল লক্ষ্য ছিল মেহনতি মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি ও গণতন্ত্র- আজও তা বাস্তবায়িত হয়নি। ক্রমান্বয়ে মানবতার পদে পদে অপমান, মূল্যবোধের অবক্ষয়, সমাজ ও রাষ্ট্রে সর্বত্রই প্রতারণা, শঠতা, নীতিহীনতা, সহিংসতা ও উলঙ্গ লালসা মানুষকে হতাশ করেছে। এইসব তিনি দীর্ঘজীবনে প্রত্যক্ষ করেছেন।” (পৃ-৩৪, প্রসঙ্গ সমকালীন ভাবনা)। তিনি লিখেছেন প্রথম আলোসহ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকায়। লিখেছেন ভাসানী, হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে। দেশের নদীশাসন নিয়ে লিখেছেন তাঁর বইয়ে। মাহবুবুর রহমান লিখেছেন এপিজে আবুল কালামকে নিয়ে, চীনের প্রেসিডেন্ট জিয়াং জেমিনকে নিয়ে। প্রণব মুখার্জীসহ আরো অনেক ব্যক্তিত্বকে নিয়ে। আইলায় ক্ষত-বিক্ষত হয়ে যাওয়া দেশকে নিয়ে। লিখেছেন বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে নিয়ে। এ বইয়ে আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশে বসে কুমিল্লায় ৩৩ পদাতিক বাহিনীর মহড়া পরিদর্শন এবং প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পাশে দায়িত্ব পালনরত মাহবুবুর রহমানের ছবি প্রকাশ হয়েছে। মাহবুবুর রহমানের সহধর্মিনী অধ্যাপিকা নাগিনা আমিনকে নিয়েও লিখেছেন জামাল উদ্দিন জামাল। তিনি বিসিএস (শিক্ষা ক্যাডারে) উন্নীত হয়ে অধ্যাপনা শুরু করেন। তাঁর পিতাও একসময় সংসদ সদস্য এবং কৃষিমন্ত্রী ছিলেন। নাগিনা আমিন বর্তমানে অবসরে।  

 বইটি পড়লে মাহবুবুর রহমানের দেশ প্রেমের কারণে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধাবোধ জাগরিত হবে পাঠকের। কেননা তাঁর দেশাত্ববোধ ছিলো শতভাগ। এ নিয়ে কোন বিতর্কের কোন অবকাশ নেই। এই দেশ প্রেমই তাঁকে সাফল্যের শীর্ষে নিয়ে যায়। 

অবসরে যাবার পর মাহবুবুর রহমান জাতীয় সংসদ সদস্যপদে নির্বাচিত হন। জাতীয় সংসদে প্রদত্ত তাঁর একটি ভাষণ তুলে ধরা হয় এ বইতে। এ ছাড়াও বেশ কিছু চিত্র এবং অলিম্পিক, চীনের জাতীয় প্রতিরক্ষা ইনস্টিটিউট ও বিশ্ব মিউজিয়াম স্মৃতি ফাউন্ডেশনের দেয়া সনদপত্রের ছবিও মুদ্রিত হয়েছে।  

তিনি জিয়াউর রহমান, আবদুস সাত্তার, হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ, বিচাপতি শাহাবুদ্দীন আহমদ, আবদুর রহমান বিশ্বাস, বেগম খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনার সময় অত্যন্ত সুচারুরূপে দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়াও পেশাগত দায়িত্ব পালনে তিনি চীনে ও কোরিয়াতে বাংলাদেশ দূতাবাসের অ্যাটাশে হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। চীনে অবস্থানকালে তিনি চীনা ভাষা শেখেন।  

 একজন মানুষকেই শুধু নয়, একজন প্রকৃত দেশপ্রেমিককে জানতে হলে এ বইটি অবশ্যই পড়তে হবে। মুদ্রণ এবং অঙ্গসজ্জা বেশ রুচিসম্মত। সোহেল আশরাফের প্রচ্ছদ বেশ মনোগ্রাহী। বইটি পাঠকপ্রিয়তা পাবে নিসন্দেহে। 

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.