× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা জামায়াত বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

হুমায়ূন আহমেদ: মৃত্যুর পর আরও একটি জন্মদিন

কামাল সিদ্দিকী বাবু

১৩ নভেম্বর ২০২৩, ১৪:৩৮ পিএম

বাংলা সাহিত্যে তিনি কী আর তার অবদান কতটুকু এ নিয়ে বিস্তর বিতর্ক আছে,আবার থাকবেও। যতদিন বাংলা ভাষাভাষী পাঠক থাকবেন ততদিনই এই বিতর্ক জিইয়ে থাকবে। হতে পারে সেটি শতক থেকে সহস্রাধিককাল। তবে  হলুদ পাঞ্জাবি পরে যেমন হিমুরা  রাস্তায় হাটবেন, তেমনি তার তৈরি ময়ূরাক্ষী নদী বয়ে যাবে অনাদিকাল ধরে। হুমায়ুনের চোখে  তার ভক্তরা দেখবেন উপচেপড়া জোছনা, টাপুর-টুপুর বৃষ্টি আর মধ্যরাতের অচেনা শহরটাকে।

আজ সোমবার (১৩ নভেম্বর) বাংলাদেশের প্রভাবশালী ঔপন্যাসিক, নির্মাতা, নাট্যকার হুমায়ূন আহমেদের ছিল ৭৫তম জন্মবার্ষিকী। যার হাত ধরে সৃষ্টি হয়েছে হিমু, মিসির আলি, রূপা, শুভ্রদের মতো তুমুল জনপ্রিয় অদৃশ্য সব চরিত্র। 

নেত্রকোনার কুতুবপুরে, ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর জন্ম নেন এই কিংবদন্তি। বাবা ফয়জুর রহমান আহমেদ ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধে তিনি পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের দোসরদের হাতে শহীদ হন। মায়ের নাম আয়েশা ফয়েজ। তাঁর আর  দুই ভাই মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও আহসান হাবীব। প্রত্যেককেই লেখালেখিতে সক্রিয়।

এদিকে আজ এই কিংবদন্তির জন্মদিন উপলক্ষে বিশেষ বিশেষ আয়োজন করা হয় তাঁর জন্মস্থান নেত্রকোনা এবং গাজীপুরের নুহাশ পল্লীতে।

হুমায়ূন আহমেদ তাঁর কীর্তি রেখেছেন শিল্প-সাহিত্যের বেশিরভাগ শাখাতেই। একাধারে তিনি উপন্যাস দিয়ে মন্ত্রমুগ্ধ রেখেছেন বাংলার মানুষকে, অন্যদিকে নির্মাণ করেছেন অনন্য সব নাটক, চলচ্চিত্র ও গান। তার হাত ধরেই তারকার সম্মান পেয়েছেন এ দেশের অনেক শিল্পী।

তার নির্মাণে উঠে এসেছে নৈসর্গিক দৃশ্য, জোছনা, বৃষ্টিসহ বাংলার অসামান্য সব ব্যঞ্জনা। তরুণ প্রজন্মকে ভিন্নভাবে প্রকৃতি চিনিয়েছেন এই দার্শনিক লেখক।

বাংলা সাহিত্য, নাটক, চলচ্চিত্র ও গান পালাবদলের এ কারিগর ১৯৭২ সালে প্রকাশিত প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’ দিয়ে নিজেকে জানান দেন। এরপর তিন শতাধিক গ্রন্থ লিখেছেন তিনি। টেলিভিশন নাটকেও  দেন ভিন্ন মাত্রা।

তাইতো তার গড়া চরিত্র বাকের ভাই’র ফাঁসির প্রতিবাদে দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে,  আবার বদি, মুনা, লবঙ্গ, তিতলি, কঙ্কা, হাসান, ছোট চাচা, বড় চাচার মতো অনবদ্য সব চরিত্র মানুষের মননে চিরস্থায়ী আসন নেয়। 

১৯৯০-এর গোড়ার দিকে চলচ্চিত্র নির্মাণ শুরু করেন। তার পরিচালনায় প্রথম চলচ্চিত্র ‘আগুনের পরশমণি’ মুক্তি পায় ১৯৯৪ সালে। ২০০০ সালে ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ ও ২০০১ সালে ‘দুই দুয়ারী’ দর্শকদের দারুণ গ্রহণযোগ্যতা পায়। ২০০৩-এ নির্মাণ করেন ‘চন্দ্রকথা’।

১৯৭১-এ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ২০০৪ সালে নির্মাণ করেন ‘শ্যামল ছায়া’ সিনেমাটি। এটি ২০০৬ সালে ‘সেরা বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্র’ বিভাগে অ্যাকাডেমি পুরস্কারের জন্য বাংলাদেশ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। এছাড়াও এটি কয়েকটি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়।

এরপর ২০০৬ সালে মুক্তি পায় ‘৯ নম্বর বিপদ সংকেত’। ২০০৮-এ ‘আমার আছে জল’ চলচ্চিত্রটি তিনি পরিচালনা করেন। ২০১২ সালে তার পরিচালনার সর্বশেষ ছবি ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ মুক্তি পায়। যা দেশ-বিদেশে প্রচুর আলোচনায় আসে। তার চলচ্চিত্রের মৌলিক গানগুলো তিনি নিজেই রচনা করেন, যার বেশিরভাগই পায় তুমুল জনপ্রিয়তা।

কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ দেশ-বিদেশে বিভিন্ন পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন তিনি। তার জন্মদিনে একগুচ্ছ গোলাপের শুভেচ্ছা। বাংলাভাষাভাষীদের প্রিয় এই লেখকের জন্মদিনে হিমুরা হলুদ পাঞ্জাবিতে সড়ক - মহাসড়ক জুড়ে তার অস্তিত্ব নিয়ে স্বপ্নে মাতুক। 

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.