বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। এর আগে এই নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমার শেষ তারিখ ১২ ফেব্রুয়ারি। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে ১৩ ফেব্রুয়ারি এবং তা প্রত্যাহারের শেষ দিন নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪ ফেব্রুয়ারি।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পরিচালনা করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার, যিনি এ নির্বাচনের ‘নির্বাচনি কর্তা’। আগ্রহী প্রার্থীদের নির্বাচনি কর্তার কার্যালয়ে (প্রধান নির্বাচন কমিশনারের অফিসে নির্ধারিত দিনে অফিস চলাকালে) মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে।
বুধবার (২৫ জানুয়ারি) কমিশনের বৈঠক শেষে দুপুরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল নির্বাচনের এই তফসিল ঘোষণা করেন। এর আগে সকাল ১১টায় সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কমিশন সভায় নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব, রাশেদা সুলতানা ও আনিছুর রহমানসহ ইসি সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তবে দেশের বাইরে থাকায় নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর এতে অংশ নিতে পারেননি।
সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল সাংবাদিকদের জানান, প্রার্থীর সংখ্যা একজনের বেশি না হলে তাকেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হবে। আর একাধিক প্রার্থী হলে সংসদের অধিবেশন কক্ষে বিধিমালা অনুযায়ী ভোট হবে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য এরই মধ্যে ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করেছে নির্বাচন কমিশন।
সিইসি আরও জানান, একাধিক প্রার্থী হলে ১৯ ফেব্রুয়ারি সংসদের অধিবেশন কক্ষে নির্বাচনি কর্তা ভোটের আয়োজন করবেন। নির্ধারিত ব্যালট পেপারে পছন্দের প্রার্থীর নাম লিখে নিজের সই দিয়ে তা জমা দেবেন সাংসদরা। ভোটের দিন গ্যালারিসহ সংসদ কক্ষে প্রার্থী, ভোটার, ভোট নেওয়ায় সহায়তাকারী কর্মকর্তা ছাড়া সবার প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রিত থাকবে।
ভোট শেষে নির্বাচন কমিশনার প্রকাশ্যে ভোট গণনা করবেন। সর্বাধিক ভোটপ্রাপ্তকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত ঘোষণা করা হবে। আর সমান ভোট পেলে প্রার্থীদের মধ্যে লটারির মাধ্যমে ফল নির্ধারণ করা হবে।
তফসিল ঘোষণার আগে নিয়ম অনুযায়ী মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল। ওইদিন দুপুর সংসদ ভবনে স্পিকারের সঙ্গে তার বৈঠকের সময় ইসি সচিব মো. জাহাঙ্গীর উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আইন, ১৯৯১ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন সংসদ সদস্যদের ভোটে। আর প্রধান নির্বাচন কমিশনার তাতে নির্বাচনি কর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
ওই আইনের সপ্তম ধারায় বলা হয়েছে- নির্বাচনী কর্মকর্তা নির্ধারিত দিন, সময় ও স্থানে মনোনয়নপত্র পরীক্ষা করবেন। প্রার্থী একজন হলে এবং পরীক্ষায় তার মনোনয়নপত্র বৈধ বিবেচিত হলে কমিশন তাকে নির্বাচিত ঘোষণা করবে। তবে একাধিক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হলে নির্বাচনের জন্য তাদের নাম ঘোষণা করবে ইসি।
২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল বাংলাদেশের ২১তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন মো. আবদুল হামিদ। সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, মেয়াদ অবসানের কারণে রাষ্ট্রপতি পদ শূন্য হওয়ার ক্ষেত্রে মেয়াদপূর্তির তারিখের আগের নব্বই থেকে ষাট দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হয়। ফলে ২৪ জানুয়ারি থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এ নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে নির্বাচন কমিশনের।
স্বাধীনতার পর থেকে ২০ মেয়াদে এ পর্যন্ত ১৭ জন রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। বাংলাদেশের আইনে এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্বে থাকতে পারেন। বর্তমান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ দুই মেয়াদে রয়েছেন। সেই হিসেবে নতুন রাষ্ট্রপতি এই পদে অষ্টদশ ব্যক্তি।
সংসদীয় গণতন্ত্র চালুর পর ১৯৯১ সালে একাধিক প্রার্থী হওয়ায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে একবার সংসদের কক্ষে ভোট করতে হয়েছিল। পরে প্রতিবারই ক্ষমতাসীন দল মনোনীত প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে আসছেন।
আরও পড়ুন
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh