ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়া বাংলাদেশি এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে ২৫ দিনের মতো খাবার রয়েছে। এ ছাড়া জাহাজটিতে বিশুদ্ধ পানি রয়েছে ২০০ টন।
জাহাজের প্রধান কর্মকর্তা মো. আতিকউল্লাহ খান এক অডিও বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছেন জাহাজটির মালিকপক্ষ কবির গ্রুপের কর্মকর্তাদের কাছে। জাহাজটি জলদস্যু নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর গতকাল মঙ্গলবার এই বার্তা পাঠানো হয়।
আতিকউল্লাহ খান অডিও বার্তায় বলেন, ‘আমাদের জাহাজে ২০–২৫ দিনের রসদ (খাবার) আছে। ২০০ টন বিশুদ্ধ পানি আছে। আর জাহাজে রয়েছে ৫৫ হাজার টন কয়লা।’ রসদ যাতে দ্রুত ফুরিয়ে না যায়, সে জন্য অপ্রয়োজনে ব্যবহার না করার জন্য সবাইকে জানানো হয়েছে।
মোজাম্বিকের মাপুতু বন্দর থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় বেলা দেড়টায় জাহাজটিতে উঠে নিয়ন্ত্রণ নেয় সোমালিয়ার জলদস্যুরা। জাহাজটিতে ৫৫ হাজার টন কয়লা রয়েছে। জাহাজটিতে থাকা ২৩ জন নাবিকের সবাই বাংলাদেশি। জাহাজটি চট্টগ্রামের কবির গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এস আর শিপিং লিমিটেডের মালিকানাধীন।
জাহাজটির মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জাহাজটি নিয়ন্ত্রণে নেওয়া কবির গ্রুপের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এখনো জলদস্যুরা যোগাযোগ করেনি। এ হিসেবে মুক্তি পাওয়ার আগ পর্যন্ত এই খাবার দিয়ে চলতে হবে জাহাজের নাবিক ও দস্যুদের।
যুক্তরাজ্যের মেরিটাইম ট্রেড অপারেশন (ইউকে এমটিও) তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিসু থেকে ৬০০ নটিক্যাল মাইল পূর্বে এ ঘটনা ঘটেছে। দুটি নৌযানে (একটি বড় এবং আরেকটি ছোট) চড়ে জাহাজটির কাছাকাছি এসে জলদস্যুরা জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। ইউকে এমটিও সমুদ্র চলাচলকারী অন্য জাহাজগুলোতে সতর্কতার সঙ্গে চলাফেরা করতে বলেছে।
জাহাজের কর্মকর্তারা কবির গ্রুপে পাঠানো নানা বার্তায় জানিয়েছেন, জাহাজটি এখন সোমালিয়ার উপকূলের দিকে নিয়ে যাচ্ছে দস্যুরা।
কবির গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে প্রথমে নাবিকদের সুরক্ষার বিষয়ে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। জলদস্যুরা নাবিকদের কোনো ক্ষতি করেনি। তারা সুস্থ আছে। জাহাজে নাবিকদের যাতে কোনো সমস্যা না হয়, সে জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
জাহাজে নাবিকদের খাবার ফুরিয়ে গেলে কীভাবে সামাল দেওয়া হয়, জানতে চাইলে বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন বলেন, জাহাজটি জলদস্যুদের কবলে পড়ার পর এখন রেশনিং করে চলতে হবে। ২০০ টন পানি দিয়ে সাধারণত এক মাস চলা যায়। রেশনিং করলে আরও বেশি দিন যাবে। একইভাবে ২৫ দিনের খাবার রেশনিং করে আরও কিছুদিন চালিয়ে নেওয়া যাবে। তবে জ্বালানি নিয়ে খুব সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
সাখাওয়াত হোসেন আরও বলেন, যত দ্রুত জাহাজ ও নাবিকদের ছাড়িয়ে আনা যাবে, তাহলে খাবার–জ্বালানি নিয়ে সমস্যা হবে না। আবার জলদস্যুরা উপকূলের কাছাকাছি নেওয়ার পর প্রয়োজনে খাবার–পানির ব্যবস্থা করে।
এর আগে ২০১০ সালে একই গ্রুপের মালিকানাধীন জাহাজ এমভি জাহান মণি ছিনতাই হওয়ার তিন মাস পর মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়িয়ে এনেছিল গ্রুপটি। আবার কোনো জাহাজ ছয় থেকে আট মাস পর মুক্ত হওয়ার নজির রয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh