আজ (২০ আগস্ট) রাজধানীর প্রেস ক্লাবে ২০২১ সালে ঘটে যাওয়া মুনিয়া ধর্ষণ ও হত্যাকান্ডে জড়িত বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীর ও অন্যান্যদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা এবং বাদীর নিরাপত্তার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে দাবি জানিয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনটি আয়োজন করেন মোসারাত জাহান মুনিয়ার পরিবারের সদস্যবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে মুনিয়ার বোন নুসরাত জাহান তানিয়া একটি বক্তব্য রাখেন। বক্তব্যের শুরুতেই ঘটে যাওয়া এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে পাশে থাকার জন্য তিনি বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপ থেকে বিজ্ঞাপন হারানোর ঝুঁকি নিয়েও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকার জন্য তিনি সেসব গণমাধ্যমকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তানিয়া সেসময়ে তিনি গুলশান থানায় মামলা করার সময় যা যা ঘটেছিল সেগুলো তুলে ধরেন। কিভাবে বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরকে বাঁচাতে তাকে অব্যাহতি দিয়েই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয় সেসব কথা বলেন।
তিনি আওয়ামী পরিবারের সন্তান, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে আওয়ামী শাসনামলেও এই নৃশংস ঘটনার বিচার পাননি সে ব্যাপারে দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন কিভাবে তিনি নানাভাবে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে বারবার সাক্ষাতের চেষ্টা করেও সুযোগ পাননি অথচ শেখ হাসিনা আনভীরের সাথে সাক্ষাত করেছেন। এই ঘটনাটিকে তিনি সদ্যই ঘটে যাওয়া ছাত্র আন্দোলনে নিহত বা আহত দের পরিবারের সাথে শেখ হাসিনার সাক্ষাতের বদলে আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত ভবন ও অন্যান্য অবকাঠামো দেখতে যাওয়া এবং দুঃখপ্রকাশের সঙ্গে তুলনা করেছেন।
নুসরাত জাহান তানিয়া এই ধর্ষণ ও হত্যা মামলার তদন্তে আনভীর কিভাবে ঘুষ দিয়ে পিবিআই থেকে একপেশে রিপোর্ট আদায় করেন এবং কিভাবে বিচারককে প্রভাবিত করে আদালতের রায়কে নিজের পক্ষে নেন এসব কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন এসব ঘটনা শেখ হাসিনার সরকারের আমলের বিচারহীনতার সংস্কৃতির একটি জলজ্যান্ত উদাহরণ।
তিনি এত বছর পরেও এ বিচারের আশার হাল ছেড়ে দেননি উল্লেখ করে বলেন, এতদিন স্বৈরাচারী সরকারের আমলে এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না পেলেও এখন নব্য নিযুক্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তিনি এই ঘটনার ন্যায়বিচার প্রত্যাশার আবেদন করেন।
তিনি বক্তব্যের শেষে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম ও তার স্ত্রী রেহনুমা কে পুরো ঘটনার শুরু থেকে তাদের পাশে থাকার জন্য বিশেষভাবে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।