ছবিঃ সংগৃহীত
ফেনীতে ভারী বর্ষণ ও ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলার বেশিরভাগ এলাকা প্লাবিত হয়েছে এবং হাজারো মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে। গ্রামের রাস্তাঘাট, ফসলি জমি সব তলিয়ে গেছে। বন্যা পরিস্থিতি সামাল দিতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেনাবাহিনী ও কোস্টগার্ডের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, ভারী বর্ষণ ও ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর পানি বিপৎসীমার অনেক ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে ভারতের ত্রিপুরায় অবস্থিত ড'ম্বু'র হাইড্রোইলেক্ট্রিক পাওয়ার প্রজেক্ট এর গেট খুলে দেওয়ায় এই বন্যা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে নদীর পানি উপচে উপচে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটিয়েছে। পরশুরামে বন্যার পানিতে ভেসে গিয়ে একজন নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানা যায়। ফেনী-পরশুরাম আঞ্চলিক সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। কয়েকটি ডিঙি নৌকায় লোকজনকে উদ্ধার করে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হলেও বেশির ভাগ মানুষ এখনো পানিবন্দী। দুর্গতদের উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মীরাও কাজ করছেন।
এর আগে প্রবল বৃষ্টিতে ২ আগস্ট পরশুরামের মুহুরী নদীর বেড়িবাঁধের ১২টি স্থানে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছিল। এরপর গত তিন দিনের ভারী বৃষ্টিতে মুহুরী নদীর বাঁধের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়ে তিন উপজেলার ৯০ শতাংশ এলাকা ডুবে গেছে। বন্যার পাশাপাশি দুর্গত এলাকায় গতকাল রাত থেকেই বিদ্যুৎ নেই। অনেক ঘরে রান্না করাও সম্ভব হচ্ছে না।
পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজা হাবিব বলেন, পরশুরাম উপজেলায় বন্যায় আগেই বেড়িবাঁধের ১২টি স্থানে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছিল। গত কয়েক দিনের অতিবৃষ্টিতে সৃষ্ট পাহাড়ির ঢলের পানি নদীতে প্রবেশ করেছে। নদীর বেড়িবাঁধের ভাঙনের স্থান দিয়ে ঢলের পানি লোকালয়ে ঢুকে বিস্তীর্ণ এলাকা ডুবিয়ে দিয়েছে। পরশুরাম উপজেলায় পৌরসভা এবং তিনটি ইউনিয়নের প্রায় ৯৫ শতাংশ এলাকা এখন পানির নিচে। গতকাল রাত থেকে ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় ১০০ জনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। ৫০০ পরিবারকে শুকনা খাবার দেওয়া হয়েছে। আরও ৫০০ প্যাকেট শুকনা খাবার এবং ৫০ টন চাল মজুত আছে। তিনি উদ্ধারকাজে সেনাবাহিনী ও কোস্টগার্ডের সহযোগিতা চেয়েছেন।
অন্যদিকে ফুলগাজী উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ছে বলে জানান ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানিয়া ভূঁইয়া। তিনি বলেন, বহু বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। ফুলগাজী উপজেলায় মুহুরী, সিলোনিয়া নদীর বাঁধে নতুন করে কোনো ফাটল না দেখা দিলেও বাঁধ উপচে আসা পানিতে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
ছাগলনাইয়া উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন ও ছাগলনাইয়া পৌরসভার বেশির ভাগ এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। সব ধরনের গ্রামীণ সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
ফেনীর জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার গণমাধ্যমকে বলেন, বন্যা পরিস্থিতির ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখা হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন কাজ করছে। পানিবন্দী মানুষকে উদ্ধারে স্থানীয় কিছু স্বেচ্ছাসেবীও কাজ করছেন। প্রয়োজনের তুলনায় সেটা খুব সামান্য। উদ্ধারকাজে সহযোগিতার জন্য সেনাবাহিনী ও কোস্টগার্ডের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। তিনি জানান, খবর পেয়ে ইতিমধ্যে সেনাবাহিনী ও কোস্টগার্ডের সদস্যরা স্পিডবোট নিয়ে রওনা হয়েছেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । সম্পাদক: 01703-137775 । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh