গত ২৪ ঘন্টায় কক্সবাজারে রেকর্ড বৃষ্টিপাতে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। কক্সবাজার সদরে অবস্থিত ঝিলংঝা পাহাড় এবং উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন একটি ধসে পাহাড় ধসে দুটি পরিবারের মোট ছয়জন নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে এক পরিবারের তিনজন বাংলাদেশি এবং অপর পরিবারের তিন সদস্য রোহিঙ্গা। এই পাহাড় ধসের ঘটনায় আরও একজনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
গতকাল (১২ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে এবং আজ (১৩ সেপ্টেম্বর) ভোরের দিকে দুটি আলাদা আলাদা স্থানে এই পাহাড় ধস ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
গতকাল (১২ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ২টার দিকে কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংঝা ইউনিয়নের ডিককুল এলাকায় প্রথম পাহাড় ধসের ঘটনাটি ঘটেছে। এতে এক পরিবারের তিনজন বাংলাদেশির প্রাণহানি ঘটেছে। নিহতরা হলেন- দক্ষিণ ডিককুলের মিজানুর রহমানের স্ত্রী আঁখি মনি এবং তার দুই মেয়ে মিহা জান্নাত নাঈমা ও লতিফা ইসলাম।
নিহত আঁখি মনির শাশুড়ির ভাষ্যমতে, রাত ২টার দিকে ভারী বর্ষণ চলতে থাকলে তার ছেলে মিজানের বাড়ির খুব কাছের একটি পাহাড় ধসের বিকট আওয়াজ শোনা যায়। তারা তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পান মিজান ও তার পরিবার মাটিচাপা পড়েছেন। সেখান থেকে মিজানকে তখনই জীবিত উদ্ধার করা হয়। কিন্তু বাকিদের ঠিক সেই সময়ই উদ্ধার করা না গেলে সেখানে দমকল বাহিনী উপস্থিত হয়। তাদের উদ্ধার তৎপরতায় মিজানের স্ত্রী ও দুই কন্যাশিশুর মৃতদেহ মাটির স্তুপ থেকে বের করা হয়।
স্থানীয় এলাকাবাসীদের কাছ থেকে জানা যায়, মিজানের বাড়িটি একদম পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ছিল। গতকাল (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেল থেকে শুরু হওয়া টানা ভারী বর্ষণে মাটি নরম হওয়া শুরু করলে মধ্যরাতে পাহাড় ধসে মিজানের বাড়ির ওপর পড়ে।
এ ব্যাপারে ঝিলংঝা ইউনিয়ন ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মিজানুর সিকদার বলেছেন, গতকাল (১২ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে কক্সবাজারে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এ কারণে আমার এলাকায় পাহার ধসে একই পরিবারের তিনজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আরও একজন আহত হয়েছেন। পাশাপাশি পাহাড়ের পাদদেশে যারা বসবাস করছে তাদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
পাহাড় ধসের দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে কক্সবাজারের উখিয়ায় অবস্থিত ১৪ নম্বর হাকিমপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। আজ (১৩ সেপ্টেম্বর) ভোরে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে পাহাড় ধসে ক্যাম্পের একই পরিবারের তিনজন সদস্য মৃত্যুবরণ করেছে। নিহতরা হলেন- ১৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ই-২ ব্লকের কবির আহমেদের ছেলে আব্দুর রহিম, আব্দুল হাফেজ ও আব্দুল ওয়াহেদ।
কক্সবাজার ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন কার্যালয়ের অতিরিক্ত কমিশনার শামসুদ দৌজা নয়ন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ক্যাম্পে পাহাড় ধসে একই পরিবারের তিনজন নিহত হয়েছেন। তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আতাউল গনি ওসমানী বলেন, জেলায় পাহাড় ধসে মোট ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে তিনজন বাংলাদেশি ও তিনজন রোহিঙ্গা আছেন।