ছবিঃ সংগৃহীত
বাংলাদেশের
জন্মলগ্ন থেকে এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মাত্রায়
অতিবাহিত হয়েছে। তবে বিগত এক দশকে আওয়ামী দুঃশাসনে গণতান্ত্রিক চর্চার অভাব, মানবাধিকার
লঙ্ঘন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় চরম ব্যর্থতা দুই দেশের সম্পর্কে বেশ ব্যাঘাত ঘটিয়েছে। তবে
এবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে ভাষণ দিতে গিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে
বৈঠক করেছেন। যা দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক এক নতুন মাত্রায় নিয়ে গেছে।
বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আন্তরিক এবং দুরদর্শী প্রচেষ্টায়
দুই দেশের মধ্যকার দূরত্ব কমে এক নতুন সম্ভাবনাময় এবং গতিশীল সম্পর্ক সৃষ্টি হতে যাচ্ছে।
এরই প্রতিফলন দেখা যায় জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে, যেখানে দেশ দুটির সরকারপ্রধানের
মধ্যে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিপক্ষীয় বৈঠক। অনেকেই মন্তব্য করেছেন যে এ বিষয়টি অত্যন্ত 'বিরল'।
এ ব্যাপারে কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের মতামত হল, জাতিসংঘের
সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কোনো দেশের শীর্ষনেতার
দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের তেমন নজির নেই। যেটি হয়েছে বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড.
মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট
জো বাইডেন এদিন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে
কাছে পেয়ে বুকে টেনে নেন। হাতে হাত রেখে বলেন, ‘বাংলাদেশের সংস্কারের যে লক্ষ্য নোবেল
বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ঠিক করেছেন, তাকে বাস্তবে রূপ দিতে সবধরনের সহযোগিতা করবে হোয়াইট
হাউস।’
প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজে এদিন রাতেই দুই শীর্ষনেতার বিরল বৈঠকের ছবি ও সংবাদ প্রচার করা হয়েছে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনের ফাঁকে নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় অনুযায়ী গতকাল (২৪ সেপ্টেম্বর) সকালে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
এমন বৈঠকে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পেশাদার কূটনীতিকরা।
অন্তর্বর্তী
সরকারপ্রধানের প্রেস উইংয়ের বরাতে জানানো হয়েছে, বৈঠকে ড. ইউনূস বিগত সরকারের আমলে
সবধরনের নিপীড়নের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের সাহসী ভূমিকা এবং বাংলাদেশ পুনর্গঠনে তাদের
গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা জো বাইডেনকে জানান। ড. ইউনূস জোর দিয়ে বলেন, ‘দেশ পুনর্গঠনে
তার সরকারকে অবশ্যই সফল হতে হবে।’ এ সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন
যেকোনো সাহায্যে বাংলাদেশ সরকারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা জুলাই
বিপ্লব চলাকালীন এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের আঁকা দেয়ালচিত্রের ছবি-সংবলিত
‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ শীর্ষক আর্টবুক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের হাতে তুলে
দেন।
বৈঠকের
পর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সেক্রেটারি শফিকুল আলম বলেন, আজকের বৈঠকটি ছিল ঐতিহাসিক। কারণ, জাতিসংঘের অধিবেশনের ফাঁকে বাংলাদেশের কোনো শীর্ষনেতার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের কোনো বৈঠক হয়নি। বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিজ থেকে বাংলাদেশে কী কী সমর্থন
ও সহযোগিতা দেওয়া প্রয়োজন, সে সম্পর্কে জানতে
চেয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি তার সরকারের পূর্ণ সমর্থন বাংলাদেশ পাবে বলে জানান।
তিনি
আরও বলেন, দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের বিরল ওই বৈঠকের পর
বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।
ইউএনজিএ'র ৭৯তম অধিবেশনে
যোগদানের জন্য প্রধান উপদেষ্টা এবং তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে কাতার এয়ারওয়েজের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইট সোমবার স্থানীয় সময় রাত ১০টা ১০ মিনিটে নিউইয়র্কের
জেএফকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এর আগে ফ্লাইটটি
বাংলাদেশ সময় ভোর ৫টা ৫ মিনিটে ঢাকার
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ছেড়ে যায়।
প্রধান
উপদেষ্টা ড. ইউনূস আগামী
২৭ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক সময় সকাল ১০ টায় জাতিসংঘ
সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দেবেন। এদিনই তিনি ঢাকার উদ্দেশ্যে নিউইয়র্ক ছেড়ে যাবেন বলে জানা গেছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh