গতকাল (২৭
সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯ তম অধিবেশনে ভাষণ
দেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এসময়
তিনি ছাত্র-জনতার বিপ্লবে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর নতুন বাংলাদেশের সঙ্গে
নতুনভাবে সম্পৃক্ত হতে বিশ্ববাসীকে আহ্বান জানিয়েছেন।
বক্তব্যের
শুরুতেই ‘সামিট অব দ্য ফিউচার’ আয়োজনের জন্য জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও
গুতেরেসের দূরদর্শী ভূমিকার প্রশংসা করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, সম্মেলনে যে
‘ভবিষ্যতের জন্য চুক্তি’ (প্যাক্ট ফর দ্য ফিউচার) এবং ‘ভবিষ্যৎ
প্রজন্মের ঘোষণাপত্র’ (ডিকলারেশন অন ফিউচার জেনারেশনস) সর্বসম্মতভাবে
গৃহীত হয়েছে তা অ্যাজেন্ডা ২০৩০ পরবর্তী বৈশ্বিক উন্নয়ন কর্মপন্থা নির্ধারণে বিশেষ
সহায়ক হবে বলে আমি মনে করি। বাংলাদেশ বিশ্বাস করে যে এই সম্মেলনের অর্জন বৈশ্বিক সমৃদ্ধির
জন্য আমাদের সবার অভিপ্রায় ও সহযোগিতা কাঠামো প্রণয়নে দিকনির্দেশক হিসেবে কাজ করবে।
প্রধান
উপদেষ্টা বলেন, এই জুলাই-আগস্টে
বাংলাদেশে যে যুগান্তকারী পরিবর্তন
সংঘটিত হয়েছে, তার পরিপ্রেক্ষিতেই আজ আমি বিশ্বসম্প্রদায়ের
এ মহান সংসদে উপস্থিত হতে পেরেছি। আমাদের গণমানুষের, বিশেষ করে তরুণ সমাজের, অফুরান শক্তি আমাদের বিদ্যমান রাষ্ট্রকাঠামো ও প্রতিষ্ঠানগুলোর আমূল রূপান্তরের
এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। দেশের জনগণের মুক্তি ও গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে
বাস্তবে রূপ দিতে বিশ্ব সম্প্রদায়কে আমাদের নতুন বাংলাদেশের সঙ্গে নতুনভাবে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
একই
সঙ্গে বাংলাদেশের এই মনসুন অভ্যুত্থান
আগামী দিনগুলোতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে মানুষকে মুক্তি ও ন্যায়বিচারের পক্ষে
দাঁড়াতে প্রেরণা যুগিয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা।
অন্তর্বর্তী
সরকারের দায়িত্বগ্রহণ প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন,
যে রাষ্ট্রকাঠামো দুঃসহ হয়ে গেছে, তা পুনর্গঠনের জন্য
আমাদের তরুণরা এবং দেশের আপামর জনসাধারণ একমত হয়ে আমার এবং আমার উপদেষ্টা পরিষদের উপর আস্থা রেখে সরকার পরিচালনার এক মহান দায়িত্ব
অর্পণ করেছে।
গণতন্ত্র,
আইনের শাসন, সমতা ও সমৃদ্ধি অর্জনের
মাধ্যমে একটি ন্যায়ভিত্তিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতান্ত্রিক সমাজ
হিসেবে আত্মপ্রকাশের অভিপ্রায় বাস্তবায়নে বাংলাদেশের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন ও সহযোগিতা গভীরতর
করার আহ্বান জানান অধ্যাপক ইউনূস।