গতকাল
(২৭ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯ তম অধিবেশনে
ভাষণ দেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
এ সময় তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ৪৩ দেশে ৬৩টি মিশনে শান্তিরক্ষী প্রেরণ করেছে।
তিনি ভবিষ্যত শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশেকে
আরও সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
বক্তব্যের
শুরুতেই ‘সামিট অব দ্য ফিউচার’
আয়োজনের জন্য জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেসের দূরদর্শী ভূমিকার প্রশংসা করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, সম্মেলনে যে ‘ভবিষ্যতের জন্য চুক্তি’ (প্যাক্ট ফর দ্য ফিউচার)
এবং ‘ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ঘোষণাপত্র’ (ডিকলারেশন অন ফিউচার জেনারেশনস)
সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়েছে তা অ্যাজেন্ডা ২০৩০
পরবর্তী বৈশ্বিক উন্নয়ন কর্মপন্থা নির্ধারণে বিশেষ সহায়ক হবে বলে আমি মনে করি। বাংলাদেশ বিশ্বাস করে যে এই সম্মেলনের
অর্জন বৈশ্বিক সমৃদ্ধির জন্য আমাদের সবার অভিপ্রায় ও সহযোগিতা কাঠামো
প্রণয়নে দিকনির্দেশক হিসেবে কাজ করবে।
শান্তিরক্ষা
কার্যক্রমের ব্যাপারে তিনি বলেন, বসনিয়া থেকে শুরু করে কঙ্গো পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন
প্রান্তে এ সব মিশনে দায়িত্ব পালনকালে ১৬৮ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিজেদের জীবন বিসর্জন
দিয়েছেন।
তিনি
বলেন, বাংলাদেশ মনে করে যে, শান্তিরক্ষা এবং সংঘাত মোকাবিলা জনগণের সমৃদ্ধি নিশ্চিত করার মূল চালিকাশক্তি। সাম্প্রতিক বিপ্লবকালে জনগণের মুক্তির আকাঙ্ক্ষা পূরণে তাদের পাশে দাঁড়িয়ে আরো একবার শান্তির প্রতি নিজেদের অঙ্গীকার প্রমাণ করেছে সশস্ত্র বাহিনী। এটা সম্ভব হয়েছে শান্তিরক্ষায় আমাদের অঙ্গীকারের কেন্দ্রবিন্দুতে মানবাধিকারকে স্থান দেওয়ার ফলে।
তিনি
আরও বলেন, জাতিসংঘের শান্তি বিনির্মাণ কমিশনের সূচনালগ্ন থেকেই শান্তিরক্ষার মতো শান্তি বিনির্মাণেও বাংলাদেশ সমান অঙ্গীকার ব্যক্ত করে এসেছে। সামনের দিনগুলোতেও আমরা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে আমাদের মূল্যবোধ ভিত্তিক অবদানের ধারাবাহিকতা রক্ষা সমুন্নত ও প্রসারিত করতে
বদ্ধপরিকর।
ড. মুহাম্মদ
ইউনূস বলেন, জাতিসংঘে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অবদানকারী চতুর্থ বৃহত্তম রাষ্ট্র হিসেবে
বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ৪৩ দেশে ৬৩টি মিশনে শান্তিরক্ষী প্রেরণ করেছে। বসনিয়া থেকে শুরু
করে কঙ্গো পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এসব মিশনে দায়িত্ব পালনকালে ১৬৮ জন বাংলাদেশি
শান্তিরক্ষী নিজেদের জীবন বিসর্জন দিয়েছেন। আমরা আশা করি, যেকোনো অবস্থায় নানা প্রতিকূলতা
সত্ত্বেও জাতিসংঘের ভবিষ্যত শান্তিরক্ষী কার্যক্রমগুলোতে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা বাহিনীর
সদস্যরা একইভাবে অবদান রাখার সুযোগ পাবেন।