আজ (৩ নভেম্বর)
জেল হত্যা দিবস। ১৯৭৫ সালের এই দিনে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধ
পরিচালনাকারী বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী
তাজউদ্দীন আহমদ, মন্ত্রিসভার সদস্য ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এএইচএম কামরুজ্জামানকে
নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
এ
হত্যাকাণ্ড স্মরণে প্রতি বছর ৩ নভেম্বর জেলহত্যা
দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
এই
নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর (১৯৭৫ সালের ৪ নভেম্বর) ওই
সময়ের কারা উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন) আবদুল আউয়াল লালবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় রিসালদার মোসলেহ উদ্দিনের নাম উল্লেখ করে বলা হয়, তার নেতৃত্বে চার-পাঁচ জন সেনাসদস্য কারাগারে
ঢুকে চার নেতাকে হত্যা করেন। গুলি করে নেতাদের হত্যা করে, পরে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়।
জাতীয়
চার নেতার রাজনৈতিক জীবন সমর্পিত ছিল দেশ ও মানুষের কল্যাণে।
ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ। বিজয় থেকে রাষ্ট্র নির্মাণেও তারা ছিলেন কান্ডারীর ভূমিকায়। এত সফলতা এবং
ত্যাগের পরও তাদের এই নির্মম পরিণতি বরণ করে নিতে
হয়।
দেশের জন্য
কলঙ্কজনক এই অধ্যায় আজও
প্রতিটি বাংলাদেশি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে।
দীর্ঘ
অপেক্ষার পর ২০০৪ সালের
২০ অক্টোবর মামলার রায় ঘোষণা করে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত। রায়ে
পলাতক আসামি রিসালদার (ক্যাপ্টেন) মোসলেহ উদ্দিন, দফাদার মারফত আলী শাহ ও দফাদার মো.
আবুল হাশেম মৃধাকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং ১২ জনকে যাবজ্জীবন
কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। ২০১৩ সালে আপিল বিভাগের রায়ের মাধ্যমে এর বিচারকাজ শেষ
হয়।
চার নেতার
সন্তানরা হারিয়েছেন তাদের পিতাকে। দেশ হারিয়েছে তারা শ্রেষ্ঠ সন্তানদের। চার নেতা হত্যাকাণ্ডে
আত্মস্বীকৃত খুনীদের বিচারের সম্মুখীন করা গেলেও তাদের সবার শাস্তি কার্যকর সম্ভব হয়ে
ওঠেনি।
জাতি আজও
ন্যায়বিচারের অপেক্ষায়।