সরকারের পক্ষ
থেকে সর্বস্তরে নিষিদ্ধ পলিইথাইলিন(পলিথিন) ও পলিপ্রপাইলিন এর ব্যাগ উৎপাদন, মজুত,
পরিবহণ, বিপণন ও ব্যবহার বন্ধের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে
আজ (৩ নভেম্বর) থেকে পলিথিন উৎপাদনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা
করা হবে।
গতকাল (২ নভেম্বর) পরিবেশ,
বন ও জলবায়ু পরিবর্তন
মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব তপন কুমার বিশ্বাস গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।
তিনি
বলেন, শুক্রবার ও শনিবার সাপ্তাহিক
ছুটি হওয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালত বন্ধ ছিল। তবে রোববার থেকে
মনিটরিং কার্যক্রম চলবে।
তপন
কুমার বিশ্বাস বলেন, রাজধানীজুড়ে আমাদের অভিযান পুরোদমে চলবে। ইতোমধ্যে জেলা পর্যায়ে অভিযান পরিচালনা শুরু হয়েছে। আমরা রাজধানীর প্রতিটি দোকানে গিয়ে তদারকি করব। কেউ যাতে পলিথিন ব্যবহার করতে না পারে সেদিকে
লক্ষ্য রাখা হবে।
পরিবেশ,
বন ও জলবায়ু পরিবর্তন
মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত এই সচিব আরও
বলেন, সবাই শুধু বলছেন বিকল্প কিছু আনার ব্যাপারে। অথচ তারা জানেন না যে, বাজারে
ইতোমধ্যে বিকল্প অনেক কিছুই রয়েছে। তা ছাড়া সরকারও
এ বিষয় নিয়ে খুবই তৎপর। বিকল্প উৎপাদনের জন্য কাজ করা হচ্ছে। যাতে বাজারে সবাই হাতের নাগালে পেতে পারে।
তপন
কুমার বিশ্বাস বলেন, কেউ যেন পলিথিন ব্যবহার করতে না পারে সে
ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টি নিয়ে কঠোরভাবে কাজ করা হবে। সবাই পলিথিন ব্যবহারের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জানি। দশ বছর আগেও
মানুষ পলিথিন ছাড়া বাজার করেছে। তাই ইচ্ছে করলে এখনও সম্ভব। তবে একটু সময় লাগবে সম্পূর্ণভাবে পলিথিন বাজার থেকে বাদ দিতে।
তিনি
বলেন, ক্রেতারা পলিথিনের পরিবর্তে পাট ও কাপড়ের ব্যাগ
ব্যবহার করতে পারেন। ব্যবসায়ীদের কাছে নির্দেশনা দেওয়ার পরও পলিথিনের ব্যাগ পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত,
সুপারশপের পর কাঁচাবাজারেও পলিথিন
ব্যাগের ব্যবহার নিষিদ্ধ হয়েছে। একই সঙ্গে পলিথিন ও পলিপ্রপাইলিন উৎপাদনকারী
কারখানাগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান শুরুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
২০০২
সালে সরকার আইন করে সাধারণ পলিথিনের উৎপাদন, বিপণন ও বাজারজাতকরণ নিষিদ্ধ
করলেও মাঠ পর্যায়ে আইনটির বাস্তবায়ন করা যায়নি। অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের কারণে বিগত বছরে পলিথিনের ব্যাগ পরিবেশের বিষফোড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে। হুমকিতে প্রকৃতি ও প্রাণীরা। রাজধানীসহ
সারা দেশে খাল, নালা-নর্দমায় পলিথিনের স্তূপের কারণে পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। ফলে সৃষ্টি হচ্ছে প্রতিকূলতা। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর গত ১
অক্টোবর সুপারশপে পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে।
প্লাস্টিক
ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের তথ্য
অনুযায়ী, দেশে প্রায় তিন হাজার কারখানায় প্লাস্টিক ও পলিথিন তৈরি
হয়। এসব প্রতিষ্ঠানে দিনে ১ কোটি ৪০
লাখ ব্যাগ উৎপাদন হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে
বেশি কারখানা রয়েছে রাজধানীর পুরান ঢাকায়।