আজ (১২ ডিসেম্বর)
সকাল থেকেই তীব্র শীতে এবং ঘন কুয়াশায় বিপর্যস্ত ব্যস্ত নগরী ঢাকার জনজীবন। আবহাওয়া
অধিদপ্তরের সূত্রে জানা গেছে গত ২দিন ধরেই রাতে স্বাভাবিকের চেয়ে ৩-৪ ডিগ্রি তাপমাত্রা
কমে যায়। সেটি গত রাতে আরও কমে গিয়েছে এবং তাঁর সঙ্গে যোগ হয় তীব্র বাতাস। এতে বিপাকে
পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ।
গতকাল (১১
ডিসেম্বর) ও এতটা কুয়াশা দেখেনি নগরবাসী। আজ (১২ ডিসেম্বর) সকালে উঠে অনেকেই ঘড়ির দিকে
না তাকিয়ে হয়তো ভেবেছেন আরেকটু ঘুমিয়ে নেওয়া যাবে। কিন্তু ঘড়ির কাঁটায় ১০টা বাজলেও
দেখা মেলেনি সূর্যের। এর আগে গতকাল (১১ ডিসেম্বর) রাতে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ৭২ ঘণ্টার
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী ৩ দিন অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা
দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে।
আজ সকালে
অফিসগামী এক যুবক মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ শিকদার বলেন, আজকে অফিসে যেতে বাসা থেকে বের
হতে দেরি হয়ে গেছে কারণ সকালে উঠে পর্দা সরিয়ে জানালার দিকে তাকিয়ে বোঝাই যাচ্ছিল না
কয়টা বাজে।
দেশের এক
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী, নওরিন জাহান বলেন, আজকে তাড়াহুড়ো করে বের
হওয়ার সময় বুঝতে পারিনি বাইরে এতটা শীত থাকবে। তাই বেশি গরম জামা না পরেই বের হয়ে যাওয়ায়
এখন ঠান্ডায় কাঁপতে হচ্ছে। গতকালও এতটা ঠান্ডা পড়েনি।
এদিকে আচমকা
এই শৈত্যপ্রবাহে সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছেন রাজধানীর সেসব মানুষ যাদের নিবাস ফুটপাত
অথবা রেললাইনের ধার। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় এদের বেশির ভাগই সকালে আগুন জ্বালিয়ে খানিকটা উষ্ণ হওয়ার চেষ্টা করছেন। বেশিরভাগের
গায়েই নেই ভারি কাপড়। অনেকেই আবার তীব্র শীতের সাথে কনকনে হাওয়ায় রাতে ঘুমাতে পারেননি।
আব্দুল মতিন(ছদ্মনাম)
পেশায় একজন দিনমজুর, যিনি কারওয়ান বাজার এলাকার আশেপাশে ফুটপাতে কিংবা রেললাইনের ধারে রাত কাটান তিনি বলেছেন, প্রতিবার
শীতে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান শীতের আগে থেকেই ছিন্নমূল মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র
বিতরণ করে। এবার তেমনটা ঘটেনি বলে আক্ষেপ প্রকাশ করেন তিনি।
নগরীর হাইকোর্ট
এলাকায় ছিন্নমূল শ্রেণীর ফুটপাতের বাসিন্দা আলেয়া বেগমের(ছদ্মনাম) কন্ঠেও শোনা গেল
একই আক্ষেপ। তিনি বলেছেন, আগে বিভিন্ন সংগঠন থেকে কম্বল, ভারী কাপড় ইত্যাদি বিতরণ করা
হত। তিনি বলেন অনেকেই এসে শীতবস্ত্র দান করে ছবি তুলে নিয়ে যেত। আমরা বিক্রিও করে দিয়েছি
অনেক শীতের কাপড়, কম্বল ইত্যাদি। তবে এবার এদের কারোরই দেখা নেই। আগের বছর থেকে একটাও
রাখেননি কেন, গোটাকয়েক কাঁথা, চাদর মিলিয়ে শীতে গুটিয়ে থাকা আলেয়া বেগমকে এই প্রশ্ন
করা হলে তিনি বলেন, আমরা রাস্তার মানুষ, আজকে এখানে থাকি কালকে আরেক জায়গায়। শীতের
কাপড় রাখার জায়গা থাকলে তো আজকে আর ফুটপাতে থাকতে হত না, যোগ করেন তিনি।