ছবিঃ সংগৃহীত।
গত কুরবানির ঈদে বহুল আলোচিত সেই ১৫ লাখ টাকার ছাগল উপহার পাওয়া জড়িত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক সদস্য মতিউর রহমান ও তার স্ত্রী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান লায়লা কানিজ (প্রথম স্ত্রী) গ্রেপ্তার হয়েছেন।
আজ
(১৫ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশের একটি দল।
বিষয়টি
নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশনস
বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।
তবে কোন মামলায়
তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য জানাতে পারেননি ডিসি তালেবুর
রহমান। যদিও এ দম্পতির বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। সবশেষ গত ৬ জানুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে
তিনটি মামলা দায়ের করেছে দুদক। ১২৪ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের
অভিযোগে মতিউর রহমান, তার প্রথম স্ত্রী (লায়লা কানিজ) ও ছেলে-মেয়ের বিরুদ্ধে মামলাগুলো
দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এর
মধ্যে প্রথম মামলার আসামি করা হয় লায়লা কনিজ
ও মতিউর রহমানকে। মামলার এজাহারে বলা হয় আসামি লায়লা
কানিজ ১৩ কোটি ১
লাখ ৫৮ হাজার টাকার
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। পাশাপাশি লায়লা কানিজের বিরুদ্ধে ১ কোটি ৫৩
লাখ টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
অন্যদিকে
তার মেয়ে ফারজানা রহমানের নামে ২ কোটি ৪৫
লাখ গোপন ও ৫৩ কোটি
৪১ লাখ টাকার বেশি অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে দ্বিতীয় মামলায়। ওই মামলায় মতিউর
রহমানকে সহযোগী আসামি করা হয়েছে।
আর
তৃতীয় মামলায় প্রথম ঘরের ছেলে আহমেদ তৌফিকুর রহমান অর্ণবের বিরুদ্ধে ১৩ কোটি ৩৮
লাখ টাকা সম্পদের তথ্য গোপন ও ৪২ কোটি
২২ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এই মামলায়ও মতিউরকে
সহযোগী আসামি করা হয়েছে।
এর
আগে, গত ১৫ ডিসেম্বর
মতিউর রহমান ও তার দ্বিতীয়
স্ত্রীর (শাম্মী আখতার শিবলী) বিরুদ্ধে ১১ কোটি ১৮
লাখ ৮৬ হাজার ১২০
টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য
গোপনের অভিযোগে দুই মামলা দায়ের করা হয়।
প্রথম
মামলায় এনবিআরের সাবেক সদস্য মতিউরের বিরুদ্ধে ৫ কোটি ২৮
লাখ ৭৫ হাজার ৯৩৯
টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ ও ১ কোটি
২৭ লাখ ৬৬ হাজার ২১৬
টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
আর
দ্বিতীয় মামলায় মতিউরের সঙ্গে আসামি হয়েছেন তার দ্বিতীয় স্ত্রী শাম্মী আখতার শিবলী। শিবলীর বিরুদ্ধে ১ কোটি ৮৭
লাখ ১৫ হাজার ৪৯০
টাকার অবৈধ সম্পদ ও ২ কোটি
৭৫ লাখ ২৮ হাজার ৪৭৫
টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪ এর ২৭ (১)
ও ২৬ (২) ধারায় অভিযোগ
আনা হয়।
কোরবানির
জন্য ১৫ লাখ টাকা
দিয়ে একটি ছাগল কিনতে গিয়ে আলোচনায় আসেন মুশফিকুর রহমান ইফাত নামের এক যুবক। এ
নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুমুল আলোচনা শুরু হয়। বলা হয়, তার বাবা এনবিআর সদস্য এবং কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট আপিলাত
ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট মতিউর রহমান।
এরপর
আলোচনা চলে মতিউর রহমান ও তার পরিবারের
সদস্যদের কোথায় কী পরিমাণ সম্পদ
রয়েছে এসব নিয়ে। এসব আলোচনার মধ্যে একের পর এক বেরিয়ে
আসতে থাকে মতিউর পরিবারের বিপুল বিত্তবৈভবের চাঞ্চল্যকর তথ্য।
পরে
গত বছরের ৪ জুন মতিউর
ও তার পরিবারের সদস্যদের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের অনুসন্ধানের নামে দুদক। অনুসন্ধানে মতিউর ও তার পরিবারের
সদস্যদের নামে ৬৫ বিঘা জমি,
আটটি ফ্ল্যাট, দুটি রিসোর্ট ও পিকনিক স্পট
এবং তিনটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের তথ্য পায় দুদক। মতিউর রহমান ও তার পরিবারের
সদস্যদের নামে থাকা ব্যাংক হিসাব, মোবাইল ফোনে আর্থিক সেবার হিসাব ও শেয়ারবাজারের বিও
হিসাব জব্দ করা হয়।
পরে
২৪ জুন মতিউর ও তার প্রথম
পক্ষের স্ত্রী এবং সন্তানের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।
এরপর
গত ২ জুলাই মতিউর
রহমান ও তার পরিবারের
সদস্যদের সম্পদ বিবরণী চেয়ে পৃথক নোটিশ পাঠায় দুদক। এসব নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে ২৯ আগস্ট মতিউর,
তার দুই স্ত্রী এবং ছেলে-মেয়েসহ পাঁচজনের সম্পদ বিবরণী দুদকে জমা দেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh