বাংলাদেশ
ব্যাংকের নিরাপত্তা ভল্টে রক্ষিত কর্মকর্তাদের তিন শতাধিক লকারে অবৈধ সম্পদ আছে কিনা, তা অনুসন্ধানে দুর্নীতি
দমন কমিশনের (দুদক) ৮ সদস্যের
একটি দল আজ (৯
ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় প্রবেশ করেছে। ঢাকা জেলা প্রশাসনের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে এসব লকার খোলা হবে এবং সেখানে রক্ষিত অর্থ-সম্পদ বা নথিপত্রের তালিকা
তৈরি করা হবে।
দুদক
জানতে পেরেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের এসব লকারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক ও বর্তমান প্রায়
তিনশ' জন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা
তাদের অর্থ-সম্পদ এবং মূল্যবান নথিপত্র সেফ ডিপোজিট হিসেবে রেখেছেন। এদের মধ্যে কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার নামেও লকার রয়েছে বলে জানা গেছে।
এর
আগে, গত ২ ফেব্রুয়ারি
দুদক বাংলাদেশ ব্যাংকের নিরাপত্তা ভল্টে কর্মকর্তাদের অর্থ-সম্পদ জমা রাখার ব্যক্তিগত সব লকার সাময়িকভাবে
ফ্রিজ করার জন্য গভর্নরের কাছে একটি চিঠি পাঠায়।
দুদকের
পরিচালক কাজী সায়েমুজ্জামান স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা
হয়, গত ২৬ জানুয়ারি
আদালতের অনুমতি নিয়ে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে দুদক টিম বাংলাদেশ ব্যাংকের কয়েন ভল্টে রক্ষিত অভিযোগ সংশ্লিষ্ট সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরীর সেফ ডিপোজিট তল্লাশি করে। সেখানে তার জমা করা তিনটি সিলগালা কৌটা খুলে ৫৫ হাজার ইউরো,
১ লাখ ৬৯ হাজার ৩০০
মার্কিন ডলার, ১০০৫.৪ গ্রাম স্বর্ণ
ও ৭০ লাখ টাকার
এফডিআর পাওয়া যায়, যা তার নিয়মিত
আয়কর রিটার্নে উল্লেখ করা হয়নি। ওই সময় অন্যান্য
কিছু কর্মকর্তার সিলগালা করা সেফ ডিপোজিটও দেখা যায়, যেগুলোতে অপ্রদর্শিত সম্পদ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগে দুদকের অনুসন্ধান চলছে।
দুদক
আরও জানায়, গত ৩০ জানুয়ারি
অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে দুদক চেয়ারম্যানের 'দুদক ও সম্পদ পুনরুদ্ধার
বিষয়ক' আলোচনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে রক্ষিত সম্পদ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। অর্থ উপদেষ্টা ওই ভল্টে রক্ষিত
সম্পদ সাময়িকভাবে ফ্রিজ করতে সম্মতি দিয়েছেন। গভর্নরের কাছে দুদকের চিঠি ও অর্থ উপদেষ্টার
সম্মতি থাকায় ভল্টের সব লকারের সম্পদ
ফ্রিজ করা হয়েছে। ফলে এখন থেকে এর মালিকরা তাদের
লকার থেকে কোনো ধরনের অর্থ-সম্পদ সরাতে পারবেন না। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওই সব লকার
খোলা ও লকারে থাকা
অর্থ-সম্পদের তালিকা তৈরির অনুমতির জন্য দুদক আবেদন করেছে।