ছবিঃ সংগৃহীত।
গাজীপুরে সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে গাজীপুরসহ সারা দেশে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ শুরু হয়েছে। এই অভিযানে এ পর্যন্ত ৮৩ জনকে আটক করা হয়েছে, যাদের অধিকাংশই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী বলে জানা গেছে।
গাজীপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) ড. চৌধুরী যাবের সাদেক জানিয়েছেন, গতকাল (৮ ফেব্রুয়ারি) রাত থেকে এই অভিযান শুরু হয়েছে এবং গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি), সেনাবাহিনী ও র্যাব যৌথভাবে এই অভিযান পরিচালনা করছে।
জিএমপি সূত্রে জানা গেছে, শুধু গাজীপুর মহানগর এলাকা থেকেই ২৫ জনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে কয়েকজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন - গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের যুবলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক মাসুদ মাহমুদ, টোক ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ সেলিম হোসেন (৩৬), কাপাসিয়া উপজেলা যুবলীগের সাবেক সদস্য মো. শাহাদাত হোসেন (৩২), টোক ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ রাজিব (২৫), টোক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি হাজী মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন (৬২), মো. মিলন মিয়া (৩৫), রায়েদ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ফয়সাল আহমেদ রুহুল (৪৩), টোক ইউনিয়ন ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. বোরহান উদ্দিন (৫০), মো. শরীফ (২৭), শ্রীপুর উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি মিলন আহম্মেদ, শ্রীপুর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আহমেদ হোসেন মোল্লা, এবং টোক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সেলিম হোসেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, গাজীপুরের ঘটনায় অনেককেই আইনের আওতায় আনা হয়েছে। যারা দেশকে অস্থিতিশীল করবে, তারা ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’-এ গ্রেপ্তার হবে। ডেভিল যতদিন শেষ না হবে, ততদিন পর্যন্ত এই অভিযান চলবে বলে তিনি ঘোষণা দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টার দিকে গাজীপুর মহানগরীর ধীরাশ্রম দক্ষিণখান এলাকায় সাবেক মন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোজাম্মেল হকের বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ তুলে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এতে অন্তত ১৫ শিক্ষার্থী আহত হন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন গাজীপুরের নেতাকর্মীরা জানান, আহতদের প্রায় সবাই গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। হামলার খবর পেয়ে কেন্দ্রীয় দুই নেতা সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহ রাতে হাসপাতালে আহতদের দেখতে যান।
তাদের দাবি, ধীরাশ্রম এলাকায় সাবেক মন্ত্রীর বাড়িতে হামলা ও লুটপাট হচ্ছে শুনে তারা সেখানে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে তারা দেখেন, বাড়িটিতে লুটপাট চলছে। এ সময় মাইকে ঘোষণা দিয়ে শত শত মানুষকে জড়ো করা হয় এবং শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানো হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গাজীপুর জেলা সমন্বয়ক আব্দুল্লাহ আল মাহিম জানান, আ ক ম মোজাম্মেল হকের ধীরাশ্রমের বাড়িতে লুটপাট হচ্ছে এমন খবরে লুটপাট ঠেকাতে তারা সেখানে গিয়েছিলেন। পরে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের ওপর হামলা চালায়।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh