আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, আজ (২০ ফেব্রুয়ারি) ট্রাইব্যুনালে পুলিশের সাবেক এডিশনাল এসপি এবং র‍্যাবের সাবেক কোম্পানি কমান্ডার আলেপ উদ্দিনের বিরুদ্ধে তৃতীয় পিটিশন ছিল। তার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলি মারাত্মক, বিশেষত গুম ও নির্যাতনের সঙ্গে তার জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। আলেপ উদ্দিন অসংখ্য মানুষকে গুম করে রাখতেন এবং নিষ্ঠুরভাবে নির্যাতন করতেন, যার মধ্যে অনেককে বছরের পর বছর ধরে আটকে রাখা হয়।

তাজুল ইসলাম বলেন, আলেপ উদ্দিনের বিরুদ্ধে বৈদ্যুতিক শক দেওয়া, চোখ বেঁধে রাখা, উল্টো করে ঝুলিয়ে পেটানোর মতো অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া, তিনি একজন আসামিকে গুম করার সময় তার বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া স্ত্রীকে ভয় দেখিয়ে রমজান মাসে রোজা ভাঙিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করেছেন, এমন তথ্য-প্রমাণ তাদের কাছে এসেছে।

তিনি আরও বলেন, এই ধরনের নিষ্ঠুর অপরাধের তদন্ত করতে সময় লাগবে, কারণ প্রতিদিনই নতুন নতুন অভিযোগ নিয়ে ভিকটিমরা তাদের কাছে আসছেন। তদন্ত শেষ হলে এসব অপরাধীদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে।

এদিকে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাবেক পুলিশ প্রধান এবং এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালকসহ ১০ কর্মকর্তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে। আজ তাদের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার ও কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে পৃথক প্রিজন ভ্যানে ট্রাইব্যুনালে আনা হয়।

হাজির করা সাবেক কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন— সাবেক পুলিশ প্রধান (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসান, ঢাকা জেলার সাবেক পুলিশ সুপার মো. আব্দুল্লাহ আল কাফি, যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান, ডিএমপি মিরপুরের সাবেক ডিসি মো. জসিম উদ্দিন মোল্লা, ঢাকার সাবেক অতিরিক্ত সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুর ইসলাম, ডিবি ঢাকা উত্তরের সাবেক পরিদর্শক মো. আরাফাত হোসেন এবং ডিএমপি গুলশান থানার সাবেক ওসি মো. মাজহারুল হক।

এছাড়া, র‍্যাবের দুই সাবেক কর্মকর্তাকে হাজির করা হয়েছে— সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) মহিউদ্দিন ফারুকী এবং বরিশাল রেঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিন।

আগের বছর ২৭ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল প্রসিকিউশনের আবেদন মঞ্জুর করে তাদের হাজির করার আদেশ দিয়েছিলেন।