বিগত
বছরের মতো এবারও বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) থেকে বের হবে “মঙ্গল শোভাযাত্রা"। এবারের নববর্ষ
উদযাপনের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে “নববর্ষে ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান”।
এ
বছর শোভাযাত্রার মূল আয়োজন করবে ঢাবির চারুকলা অনুষদ। শোভাযাত্রাটি এবার হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক, যেখানে দেশের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা তাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উপাদান নিয়ে অংশগ্রহণ করবেন। শিল্পকলা একাডেমির তত্ত্বাবধানে তারা শোভাযাত্রায় অংশ নেবেন।
এদিকে,
শোভাযাত্রায় থাকছে শহিদ আবু সাঈদের ২০ ফুট দীর্ঘ
ভাস্কর্য, যা তার অকুতোভয়
দৃশ্যকে তুলে ধরবে—দুই হাত প্রসারিত বুক টান করে দাঁড়িয়ে। চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আজাহারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত
করেছেন।
তিনি
জানান, এবার শোভাযাত্রায় প্রাথমিকভাবে বড় আকারে চারটি
ভাস্কর্য রাখা হবে। এর মধ্যে একটি
শহিদ আবু সাঈদের ভাস্কর্য থাকবে, আর অন্যগুলো স্বৈরাচারের
প্রতীকী ভাস্কর্য। এছাড়া, শোভাযাত্রায় বড় আকারে রাজা-রানির অন্তত চারটি মুখোশ, বাঘ, প্যাঁচা, পাখি, ফুল ইত্যাদি মুখোশের শতাধিক আয়োজন থাকবে।
এ
বছর শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা শোনা গেলেও, এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন কর্মসূচি নিয়ে সোমবার (২৪ মার্চ) ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে এক সভা অনুষ্ঠিত
হয়, যেখানে উপাচার্য ড. নিয়াজ আহমেদ
খান সভাপতিত্ব করেন। সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীও সভায় উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের জানান, মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।
উল্লেখ্য,
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ ১৯৮৯ সাল থেকে পহেলা বৈশাখে শোভাযাত্রার আয়োজন করে আসছে। শুরুর দিকে এটির নাম ছিল আনন্দ শোভাযাত্রা, কিন্তু নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে নাম পরিবর্তন করে মঙ্গল শোভাযাত্রা রাখা হয়, যাতে অমঙ্গলকে দূরে রেখে মঙ্গলের আহ্বান জানানো হয়। ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর ইউনেসকো
মঙ্গল শোভাযাত্রাকে বিশ্বের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে।