জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত শিশু বাসিত খান মুসা (৭) সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরেছে। ৫ মাস ১২ দিন পর গতকাল (৩ এপ্রিল রাতে) তিনি দেশে ফিরে আসেন।
মুস্তাফিজুর রহমান ও নিশামনি দম্পতির একমাত্র সন্তান বাসিত খান মুসা। গত ১৯ জুলাই, রাজধানীর রামপুরার মেরাদিয়া হাট এলাকায় নিজ বাসার নিচে আইসক্রিম কিনে দিতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন মুসা এবং তার দাদি মায়া ইসলাম (৬০)। পরবর্তীতে মায়া ইসলাম পরদিন মারা যান।
বাসিত খান মুসাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসা দেওয়া হয়। তবে তার অবস্থার অবনতি হলে সরকার ২২ অক্টোবর তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে পাঠায়।
বিমানবন্দরে নামার পর মুসাকে সরাসরি সিএমএইচে নেওয়া হয়, এমনটাই জানিয়েছেন তার বাবা মুস্তাফিজুর রহমান।
মুসার মা নিশামনি জানান, সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকরা বলেছেন যে, মুসার উচ্চ সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে, তাই তাকে অন্তত তিন মাস আলাদাভাবে রাখতে হবে। দেশে থাকা অবস্থায় মুসা নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) ছিলেন এবং কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্র ছাড়া শ্বাস নিতে পারতেন না। খিঁচুনি হতে শুরু করেছিল এবং তার শরীর অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী হয়ে গিয়েছিল, ফলে রক্তে সংক্রমণ ঠেকানো যাচ্ছিল না। তার শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হচ্ছিল।
সিঙ্গাপুরে অত্যন্ত ব্যয়বহুল অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে তার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা হয় এবং ধীরে ধীরে তার অবস্থার উন্নতি হয়। সিঙ্গাপুরে চিকিৎসার সময় মুসার মাথা, গলা, পেটে ২০টিরও বেশি অস্ত্রোপচার হয়েছে।
সিএমএইচের পেডিয়াট্রিক নিউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক কর্নেল নাজমুল হামিদ বলেন, ফিজিওথেরাপি, অকুপেশনাল থেরাপি ও স্পিচ থেরাপির মাধ্যমে মুসাকে দ্রুত পুনর্বাসন করে বাড়ি পাঠানোর লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।