ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের চালানো বর্বর গণহত্যার প্রতিবাদে এবং স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে আজ (১১ এপ্রিল) রাজধানীর বায়তুল মোকাররম এলাকা জুমার নামাজের পর উত্তাল হয়ে ওঠে।

বিভিন্ন ইসলামী দল ও সংগঠনের ব্যানারে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল থেকে ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করা হয়। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ইসরায়েলের ওপর চাপ প্রয়োগ করে এই গণহত্যা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার উদ্যোগে এক বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। একই সময়ে ‘বাংলাদেশ তিসরি ইনসাফ দল’ এবং ‘জাতীয় ইমাম সমাজ বাংলাদেশ’-এর পক্ষ থেকেও পৃথক বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয়।

সমাবেশে ইসলামী যুব আন্দোলনের নেতারা বলেন, ইসরায়েল যে নৃশংস গণহত্যা চালাচ্ছে, তা মানবতার চরম লঙ্ঘন। তারা বলেন, এই বর্বরতা বন্ধ করতে হলে ইসরায়েলি পণ্য বর্জন করতে হবে। দেশের যেসব ব্যবসায়ী এসব পণ্য আমদানি করছেন, তাদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়—এই ব্যবসা থেকে সরে আসতে। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা সবসময় ফিলিস্তিনের পাশে থাকবে বলেও তারা উল্লেখ করেন।

নেতারা আরও বলেন, গাজায় আমেরিকা ও ইসরায়েলের প্রত্যক্ষ মদদে যে হত্যাযজ্ঞ চলছে, তা আন্তর্জাতিক যুদ্ধনীতির সম্পূর্ণ পরিপন্থী। তারা বলেন, “হামাসের বিরুদ্ধে পারছে না বলে এখন শিশু, নারী ও নিরীহ মানুষদের টার্গেট করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। অথচ জাতিসংঘসহ কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থা কার্যকর কোনো ভূমিকা রাখছে না। ওআইসি ও অন্যান্য মুসলিম সংগঠনগুলোকে এখনই শক্ত অবস্থান নিতে হবে।”

বাংলাদেশ তিসরি ইনসাফ দলের বিক্ষোভ থেকে বলা হয়, গাজায় শিশুদের পর্যন্ত রেহাই দেওয়া হচ্ছে না। নিরীহ মানুষের ওপর নির্বিচারে হামলা চালিয়ে ইসরায়েল মানবতাকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে। বক্তারা ইসরায়েলি পণ্য বর্জন এবং বিশ্বজুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে জনমত গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

জাতীয় ইমাম সমাজ বাংলাদেশের নেতারা বলেন, “ইসরায়েলের বর্বরতা দাজ্জালের আবির্ভাবের পূর্বাভাস। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ভবিষ্যদ্বাণী আজ বাস্তবে পরিণত হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া এখন মুসলমানদের জন্য ফরজ।” তারা বলেন, “বাংলাদেশের ইসলামী দলগুলোর এই প্রতিবাদ-আন্দোলনে আমরা পূর্ণ সমর্থন জানাই এবং চাই অন্যান্য মুসলিম রাষ্ট্রগুলোও একইভাবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট অবস্থান গ্রহণ করুক।”

বক্তারা আরও বলেন, “ইসরায়েলি পণ্যের একটি তালিকা করে তা বর্জনের ব্যবস্থা নিতে হবে, যাতে দেশের মানুষ সহজেই এই ঘৃণ্য রাষ্ট্রের পণ্য বর্জন করতে পারে।”

বিক্ষোভ শেষে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে বের হওয়া মিছিলগুলোতে ইসরায়েলের প্রতি ঘৃণা ও তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয় এবং ফিলিস্তিনের পাশে থাকার দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করা হয়।