আজ (১২ এপ্রিল) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হলো ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি, যা শেষ হয় একটি আবেগঘন মোনাজাতের মাধ্যমে। বিকেল ৪টার দিকে এই বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি আবদুল মালেক। মোনাজাতে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা, শান্তি এবং নির্যাতিত মুসলমানদের জন্য আল্লাহর সাহায্য কামনা করা হয়। উপস্থিত অনেকের চোখে ছিল অশ্রু।
এই কর্মসূচির সূচনা হয় পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে। ইসরায়েলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও ফিলিস্তিনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশের লক্ষ্যে আয়োজিত এ সমাবেশে অংশ নেয় লক্ষাধিক মানুষ। কর্মসূচির মঞ্চে ঘোষণাপত্র পাঠ করেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। এতে ইসরায়েলের সঙ্গে সকল ধরনের দ্বিপাক্ষিক চুক্তি বাতিল ও কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্নের আহ্বান জানানো হয়।
উদ্যানে স্লোগানে স্লোগানে প্রকম্পিত হচ্ছিল চারপাশ। ‘ফিলিস্তিন মুক্ত করো’, ‘গাজা রক্তে রঞ্জিত, বিশ্ব কেন নীরব’— এমন নানা শ্লোগান ও প্ল্যাকার্ডে প্রতিবাদ জানায় জনসাধারণ। ফিলিস্তিনের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা ছিল সকলের কণ্ঠে।
‘প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশ’ প্ল্যাটফর্মের ডাকে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, রাজনৈতিক নেতা, ইসলামিক বক্তা এবং সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বিশিষ্টজনেরা।
উপস্থিতদের মধ্যে ছিলেন বিশিষ্ট ইসলামিক চিন্তাবিদ ড. মিজানুর রহমান আজহারী, জনপ্রিয় ইসলামি আলোচক শায়খ আহমাদুল্লাহ, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ প্রমুখ।
বিএনপির পক্ষে কর্মসূচিতে অংশ নেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী এবং সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ।
জামায়াত ইসলামীর পক্ষ থেকে ছিলেন সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের সেক্রেটারিগণ রেজাউল করিম ও শফিকুল ইসলাম মাসুদ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ লেবার পার্টির (একাংশ) চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান এবং গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান।
সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল সহকারে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জড়ো হতে থাকেন মানুষ। শাহবাগ, দোয়েল চত্বর, নীলক্ষেতসহ নানা প্রান্ত থেকে মিছিল এসে মিলিত হয় মূল আয়োজনে। অংশগ্রহণকারীদের হাতে ছিল বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনের পতাকা। কেউ কেউ অভিনব প্রতিবাদে অংশ নেন—ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী ও সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবি হাতে নিয়ে তারা নৃশংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান।