ছবিঃ সংগৃহীত।
আজ,
১৩ এপ্রিল ২০২৫, বাংলা ১৪২৫ সনের চৈত্র মাসের শেষ দিন—চৈত্র সংক্রান্তি। এটি বাঙালির ঐতিহ্যবাহী উৎসব, যা পুরনো বছরের
বিদায় ও নতুন বছরের
আগমনের প্রাক্কালে পালিত হয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই দিনটি শুধুমাত্র
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে, সার্বজনীন
উৎসবে পরিণত হয়েছে।
চৈত্র
সংক্রান্তির উৎপত্তি ও ঐতিহ্য
চৈত্র
সংক্রান্তি মূলত সূর্যদেবের মেষ রাশিতে প্রবেশের দিন হিসেবে চিহ্নিত। বাংলা পঞ্জিকা অনুসারে, এই দিনটি পুরনো
বছরের অবসান ও নতুন বছরের
সূচনার প্রতীক। প্রাচীনকাল থেকে বাংলার গ্রামীণ সমাজে এই দিনটি বিভিন্ন
সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানের
মাধ্যমে উদযাপন করা হয়। এ দিনটি 'শাকান্ন
উৎসব' নামে পরিচিত, যেখানে বিভিন্ন প্রকার শাক-সবজি দিয়ে রান্না করা হয়। এছাড়া 'হালখাতা'র মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা
পুরনো হিসাব-নিকাশ শেষ করে নতুন বছরের জন্য নতুন খাতা খুলে থাকেন। 'চড়ক পূজা' ও 'গম্ভীরা'র
মতো ধর্মীয় অনুষ্ঠানও এই দিনে অনুষ্ঠিত
হয়।
আজকের
আয়োজনসমূহ
ঢাকা
শহরে চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান
অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি দুই দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালা আয়োজন করেছে। আজ বিকেল ৪টায়
একাডেমির উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে বিজু উৎসব, লাঠি খেলা, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী নৃত্য, ঢাক-ঢোল পরিবেশনা, লোকনৃত্য, সাইদুলের কিচ্ছা এবং অ্যাক্রোবেটিক প্রদর্শনী। এছাড়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি ও বিভিন্ন শিক্ষা
প্রতিষ্ঠানে মেলা, ঘুড়ি উৎসব, পুঁথি পাঠ, পুতুলনাট্য, পালাগান, গম্ভীরা ও রায়বেশের মতো
লোকসংস্কৃতির নানা আয়োজন থাকবে।
মেলা
ও বাজার
চৈত্র
সংক্রান্তি উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন স্থানে বসবে মেলা। মেলায় তালপাতার পাখা, বাঁশ-বেতের কুলা, চালনী, মাটির হাঁড়ি, সরা, ব্যাংক, শৌখিন সামগ্রী, খাদ্যদ্রব্য যেমন: লাড্ডু, তিলা, গজা, জিলাপি, বাতাসাসহ বাংলার ঐতিহ্যবাহী পণ্য বেঁচা-কেনা হবে। এছাড়া, বিভিন্ন এলাকায় 'তালতলার শিরনি' তৈরি করা হবে, যেখানে তালগাছের নিচে চাল ও তালের গুড়
মিশিয়ে শিরনি তৈরি করা হয়।
চৈত্র
সংক্রান্তির সামাজিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব
চৈত্র
সংক্রান্তি বাঙালির জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে। এটি পুরনো বছরের গ্লানি ও দুঃখ-বেদনা
ভুলে নতুন বছরের আগমনের আনন্দে মেতে ওঠার উপলক্ষ। এই দিনটি শুধু
একটি উৎসব নয়, বরং বাঙালির ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও সামাজিক বন্ধনকে
শক্তিশালী করার একটি মাধ্যম।
চৈত্র
সংক্রান্তি উপলক্ষে সারাদেশে বিভিন্ন ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকা শহরে বিশেষ করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে
বড় ধরনের আয়োজন রয়েছে। এছাড়া, বিভিন্ন এলাকায় মেলা, পিঠাপুলি, শিরনি, লাঠিখেলা, ঘুড়ি উৎসবসহ নানা আয়োজনের মাধ্যমে বাঙালির এই ঐতিহ্য উদযাপিত
হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh