পহেলা
বৈশাখ উপলক্ষে আয়োজিত ঐতিহ্যবাহী ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’র নাম পরিবর্তন
করে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’ রাখার সিদ্ধান্তে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।
তারা আয়োজক কমিটির কাছে এই নাম পরিবর্তনের
পেছনে যৌক্তিক ব্যাখ্যা দাবি করেছেন।
আজ (১৩ এপ্রিল)
সকাল ১১টায় চারুকলা প্রাঙ্গণে এক সংবাদ সম্মেলনে
শিক্ষার্থীরা এই ক্ষোভ প্রকাশ
করেন। একইসঙ্গে শোভাযাত্রা আয়োজনে দায়িত্বশীলতা, স্বচ্ছতা এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
চারুকলার
প্রিন্ট মেকিং বিভাগের শিক্ষার্থী জাহরা নাজিফা বলেন, “মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের কোনো পরামর্শ ছাড়া নেওয়া হয়েছে। এটি অত্যন্ত হতাশাজনক। কিছু পক্ষ নামটি নিয়ে রাজনৈতিক ব্যাখ্যা দাঁড় করাচ্ছে, যা ইতিহাসসিদ্ধ নয়।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার বৈশাখ নয়, বরং জুলাই মাসে ক্ষমতায় আসে। তাই ‘মঙ্গল’ শব্দকে রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা অনুচিত।”
তিনি
আরও অভিযোগ করেন, যে সিনেট সভায়
নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়, সেখানে শিক্ষার্থীদের কোনো প্রতিনিধিত্ব ছিল না। অথচ এই শোভাযাত্রার মূল
প্রস্তুতিতে শিক্ষার্থীরাই মুখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে।
নাজিফা
আরও জানান, এবার শোভাযাত্রার মোটিফ তৈরির দায়িত্ব শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সরিয়ে নিয়ে শিক্ষকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে এবং বিষয়টিকে একটি দুই ক্রেডিটের কোর্স হিসেবে চালু করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্তও শিক্ষার্থীদের
মতামত ছাড়া নেওয়া হয়েছে।
প্রাক্তন
শিক্ষার্থী জাহিদ জামিল বলেন, “সম্প্রতি আয়োজকদের সঙ্গে বৈঠকে ডিন সাহেব বলেছিলেন, নাম অপরিবর্তিত রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু পরে হঠাৎ করেই অজুহাত দেখিয়ে নাম পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছে, যা আমাদের জন্য
চরম হতাশার।”
শিক্ষার্থীরা
আরও জানান, নববর্ষের আয়োজনে তারা অংশ নেবেন, তবে ভবিষ্যতে এমন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে
আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এ বিষয়ে একটি
যৌথ নীতিমালা তৈরিরও দাবি জানান তারা।