ওয়াক্ফ আইনকে কেন্দ্র করে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুর্শিদাবাদে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় বাংলাদেশের মানুষ জড়িত—পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এমন অভিযোগকে দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।গতকাল (১৭ এপ্রিল) কলকাতার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের সঙ্গে এক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বাংলাদেশের দুষ্কৃতিকারীদের মুর্শিদাবাদে এনে পূর্বপরিকল্পিতভাবে দাঙ্গা করানো হচ্ছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ইঙ্গিত করে তিনি আরও বলেন, আপনি বাংলাদেশের পরিস্থিতি জানেন না? আপনি ইউনূসের সঙ্গে গোপন বৈঠক ও চুক্তি করুন—দেশের ভালো হলে আমিও খুশি হবো। কিন্তু আপনারা কী পরিকল্পনা করছেন? কোন এজেন্সির মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে লোক এনে দাঙ্গা করানো হচ্ছে?
এই মন্তব্যের রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া ইতোমধ্যে জানিয়েছে ভারতের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। এবার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ। একই দিন (১৭ এপ্রিল) ঢাকায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, মুর্শিদাবাদের সহিংসতায় বাংলাদেশকে জড়ানোর যেকোনো প্রচেষ্টাকে আমরা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করছি।
তিনি আরও জানান, ভারতে মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর হামলা ও জানমালের ক্ষয়ক্ষতির ঘটনায় বাংলাদেশ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং এসব ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে। একই সঙ্গে মুসলিম সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভারত সরকার ও পশ্চিমবঙ্গ উভয় সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এর আগে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, এই দাঙ্গা বিজেপির পূর্বপরিকল্পনার অংশ। বাইরে থেকে লোক এনে, বিশেষ করে সীমান্ত এলাকা দিয়ে বিএসএফ-এর সহযোগিতায় এই কাজ করানো হয়েছে। এ সময় তিনি ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর একটি এক্স (সাবেক টুইটার) পোস্টের উদ্ধৃতি দেন, যেখানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্রের বরাতে বলা হয়—বাংলাদেশ থেকে লোক এসে মুর্শিদাবাদে সহিংসতার ঘটনায় জড়িত।
মমতা বলেন, এর দায়ভার কেন্দ্রকে নিতে হবে। কেন বিএসএফ বাংলাদেশ থেকে লোক ঢুকতে দিল? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে।