ছবিঃ সংগৃহীত।
জাতীয় নির্বাচনের আগে সময়টা অত্যন্ত কঠিন—এমন মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ (২৯ এপ্রিল) রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স মাঠে পুলিশ সপ্তাহ ২০২৫–এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, দেশের এই সংকটকালে পুলিশের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরাজিত শক্তি যেন দেশকে অস্থিতিশীল করতে না পারে, সে বিষয়ে পুলিশকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।
ড.
ইউনূস বলেন, দেশে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন
আয়োজনে পুলিশের দায়িত্ব অত্যন্ত বড়। সেই সঙ্গে তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, অতীতে স্বৈরাচার সরকার পুলিশকে দলীয় বাহিনীতে পরিণত করেছিল, যার ফলে পুলিশ বাহিনী এবং জনগণের মধ্যে একটি গভীর বিচ্ছিন্নতা তৈরি হয়। অবৈধ আদেশ পালন করতে গিয়ে জনরোষের মুখে পড়তে হয়েছে অনেক পুলিশ সদস্যকে। অনেক সৎ ও নিষ্ঠাবান
সদস্যদেরও তার মূল্য দিতে হয়েছে। এই দূরত্ব ঘোচানো
এবং আস্থা ফিরিয়ে আনার চ্যালেঞ্জ সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার বলেও জানান প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি
বলেন, ভবিষ্যতে যেন আর কখনও পুলিশকে
রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার না করা হয়,
তার জন্য নির্বাচনকালীন এ সময়টা গুরুত্বপূর্ণ।
আমরা এখন এক প্রকার যুদ্ধাবস্থায়
আছি। পরাজিত শক্তি যেন দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে, সে
বিষয়ে আপনাদের সজাগ থাকতে হবে।
প্রধান
উপদেষ্টা আরও বলেন, গত ১৬ বছরে
পুলিশ ও জনগণের সম্পর্কের
মধ্যে যে ফাটল ধরেছে,
তা মেরামতের সময় এসেছে। পুলিশের প্রতি মানুষের আস্থা ফেরাতে হলে একটি মানবিক, দায়িত্বশীল এবং পক্ষপাতহীন বাহিনী হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তিনি মনে করেন, আন্তরিক পরিবেশ তৈরি হলে পুলিশ-জনগণের এই সম্পর্ক পুনরায়
মজবুত হবে।
ড.
ইউনূস তার বক্তব্যে ফিরে যান ইতিহাসের পাতায়ও। স্মরণ করেন ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতের
কথা, যখন পাকিস্তানি বাহিনীর নৃশংস ‘অপারেশন সার্চলাইট’-এর বিরুদ্ধে রাজারবাগ
পুলিশ লাইন্সেই প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে ওঠে। সেই ঐতিহাসিক স্থানে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, একসময় যে পুলিশ বাহিনী
ছিল সাহসিকতার প্রতীক, এখন সেই মর্যাদা পুনরুদ্ধার করাটাই সবচেয়ে বড় কাজ।
বক্তব্যে
তিনি আরও স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছরের জুলাই
আন্দোলনে পুলিশকে প্রায় দেড় মাস ধরে জনগণের মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড় করানো হয়েছিল। ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের
পর দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কার্যত ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়ে। এমন প্রেক্ষাপটে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী পুলিশ সপ্তাহ, যার এবারের প্রতিপাদ্য—“আমার পুলিশ আমার দেশ, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ।”
অনুষ্ঠানের
শেষদিকে সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ কর্মকাণ্ডের
স্বীকৃতি হিসেবে ৬২ জন পুলিশ
সদস্যকে বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম) ও রাষ্ট্রপতি পুলিশ
পদক (পিপিএম) প্রদান করা হয়। উল্লেখযোগ্য যে, গত বছর এই
পদক পেয়েছিলেন ৪০০ জন।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh