আজ (২ মে) রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটে আয়োজিত আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলে, বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা এখন প্রশ্ন করছেন—হাসিনা গণহত্যা করেছে কি না। আমি বলছি, আপনারা সাংবাদিক না। সারা বিশ্ব দেখেছে, শেখ হাসিনা গণহত্যা চালিয়ে ভারতে পালিয়ে গেছেন।
সমাবেশে তিনি আরও বলেন, নৌকা মার্কাকে বাংলাদেশ থেকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে হবে। বিচার চলাকালীন আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে। বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের কারণে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ এখনো আসছে না।
নাহিদ ইসলাম দাবি করেন, জুলাই অভ্যুত্থানের নয় মাস পার হয়ে গেলেও আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধ ও নিবন্ধন বাতিলের দাবিতে আমাদের আবারও রাজপথে নামতে হয়েছে। এটি আমাদের সামষ্টিক ব্যর্থতা। জাতির কাছে অন্যতম প্রতিশ্রুতি ছিল বিগত ফ্যাসিবাদী আমলের বিচার নিশ্চিত করা এবং দেশের সংস্কার সাধন করা।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার যুদ্ধের পর ১৯৭২ সালে আমার সোনার বাংলার স্বপ্ন মুজিববাদীদের হাতে বেহাত হয়ে যায়। দেশটিকে ভারতীয় শাসকগোষ্ঠীর হাতে তুলে দেওয়া হয়। মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষা ব্যর্থ করা হয়। মুজিববাদী সংবিধানে ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’-এর নামে বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর ভাষা ও সাংস্কৃতিক অধিকার হরণ করা হয়। গণতন্ত্রের নামে একদলীয় শাসন, বাকশাল কায়েম করা হয়।
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, বাংলাদেশে বিভিন্ন সময়ে সামরিক হস্তক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। নব্বইয়ে জনগণ রাজপথে নেমে স্বৈরতন্ত্রের পতন ঘটিয়েছিল। অথচ ৩০ বছর পর আবারও সেই স্বৈরতন্ত্র ফিরে এসেছে। আমরা সবাই জানি, বিগত ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগ কীভাবে দেশে ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচার কায়েম করেছে।
নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করেন, জুলাই ও আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতা যখন অধিকারের জন্য রাজপথে নামে, তখন এই সরকারের পুলিশ, সেনাবাহিনী ও বিজিবি গুলি চালায়। আওয়ামী লীগ কোনো রাজনৈতিক দল নয়। তাদের নিবন্ধন বাতিল করে দলটি নিষিদ্ধ করতে হবে। কিন্তু নয় মাসেও আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিলের উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
তিনি বলেন, যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তারা জামিনে বেরিয়ে আসছে। মামলা নিয়ে বাণিজ্য হচ্ছে। তৃণমূল পর্যায়ে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টাও চলছে।
নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন কার উদ্দেশে কাজ করছে? আমরা দেখেছি, কিছু সাংবাদিক এখনো শেখ হাসিনার গণহত্যার প্রশ্নে ধোঁয়াশা সৃষ্টি করছে। আমি তাদের বলছি, আপনারা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর।