সাবেক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে দেয়া গণমাধ্যমের লাইসেন্সগুলো তদন্ত করে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা
মো. মাহফুজ আলম। আজ (৫ মে) জাতীয়
চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরে
“ফ্যাসিবাদী শাসনামলে সাংবাদিক হত্যা-নিপীড়ন” শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি
এ মন্তব্য করেন।
মাহফুজ
আলম বলেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে যেসব গণমাধ্যম লাইসেন্স পেয়েছে, সেগুলো পর্যালোচনা করে দেখা হবে। ভুয়া সাংবাদিকদের খুঁজে বের করা হবে। তিনি আরও বলেন, সরকারকে প্রশ্ন করতে হবে, কারণ সরকারকে প্রশ্ন করলে সরকার আরও দায়িত্বশীল হয়। তবে প্রশ্ন আর প্রোপাগান্ডা এক
জিনিস নয়।
তিনি
কিছু গণমাধ্যমের ভূমিকার সমালোচনা করে বলেন, বেশ কয়েকটি পত্রিকা এখনও ‘জুলাই অভ্যুত্থান’ না লিখে ‘ক্ষমতার
পটপরিবর্তন’ বলে উল্লেখ করছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।
এত বড় একটি রাজনৈতিক
ঘটনা যদি শুধুই ‘আন্দোলন’ নামে চালানো হয়, তাহলে সেটা হতাশাজনক ও গণমাধ্যমের দায়িত্বহীনতা
প্রকাশ করে।
মাহফুজ
আলম স্পষ্ট করেন যে, সরকার কোনও সংবাদমাধ্যমকে আঘাত করতে দেবে না এবং কেউ
যদি হয়রানিমূলক মামলার শিকার হয়, সেসব মামলাও পর্যালোচনা করা হবে। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত যত মামলা হয়েছে,
সবগুলো তদন্ত করে দেখা হবে।
সাংবাদিকদের
চাকরিচ্যুতির বিষয়ে তিনি বলেন, কোন সাংবাদিকের চাকরি গেলে সেটা নিয়ম মেনেই হতে হবে। হঠাৎ করে কাউকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়ার সুযোগ নেই। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, “দীপ্ত টিভি বন্ধ করেছে মালিকপক্ষ, অথচ সাধারণ মানুষ ভাবছে সরকার করেছে। এটা হঠকারিতা। সরকার চাইছে না কোনো গণমাধ্যম
বন্ধ হোক। তবে সংবাদমাধ্যম কোনো রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করেছে কি না, তা
খতিয়ে দেখা হবে।
আওয়ামী
লীগের শাসনামলকে ‘ফ্যাসিবাদী অধ্যায়’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে মাহফুজ আলম বলেন, আমাদের স্মৃতিতে সবসময় ফ্যাসিবাদকে ভয়ংকরভাবে ধরে রাখতে হবে, না হলে মানুষ
এই কালো অধ্যায় ভুলে যাবে। তিনি বলেন, শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনার
শাসনামল কোনো কালের সাথেই মিলে না। এরশাদ স্বৈরাচার হলেও শেখ হাসিনাকে ফ্যাসিস্ট বলা হয়, কারণ এরশাদের জনবল কম ছিল, কিন্তু
আওয়ামী লীগের লোকবল ছিল সবখানে—এই কারণে তারা
সর্বব্যাপী ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে পেরেছে।
শেখ
হাসিনার ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, আজ আওয়ামী লীগের
অনেক নেতাকর্মী পলাতক, এর পেছনে দায়ী
শেখ হাসিনা। তিনি শেখ পরিবারের সর্বশেষ সদস্য যিনি পালিয়ে গেছেন। এর আগে এই
পরিবারের সবাই পালিয়েছেন।