ছবিঃ সংগৃহীত।
ক্রমবর্ধমান শ্রমিক সংকট মোকাবিলায় আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশ থেকে অন্তত এক লাখ শ্রমিক নিয়োগের পরিকল্পনা করেছে জাপানি কর্তৃপক্ষ ও ব্যবসায়িক মহল। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) টোকিওতে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ সেমিনার অন হিউম্যান রিসোর্সেস’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, "জাপানে বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে সরকার প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ
করবে। এটি আমার জন্য অত্যন্ত রোমাঞ্চকর ও অনুপ্রেরণাদায়ক একটি
দিন। কারণ এটি শুধুই কর্মসংস্থানের সুযোগ নয়, বরং বাংলাদেশের মানুষকে জাপানকে জানার একটি নতুন দ্বার উন্মোচন করবে।"
সেমিনারে
বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে
দুটি গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষরিত হয়। প্রথমটি হয় বাংলাদেশের ব্যুরো
অব ম্যানপাওয়ার এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড ট্রেনিং (বিএমইটি) ও জাপান-বাংলাদেশ
যৌথ উদ্যোগ কাইকম ড্রিম স্ট্রিট (কেডিএস)-এর মধ্যে। দ্বিতীয়টি
হয় বিএমইটি, জাপানের ন্যাশনাল বিজনেস সাপোর্ট কম্বাইন্ড কোঅপারেটিভস (৬৫টিরও বেশি কোম্পানির একটি ফেডারেশন) এবং জেবিবিআরএ (জাপান বাংলা ব্রিজ রিক্রুটিং এজেন্সি)-এর মধ্যে।
প্রধান
উপদেষ্টা বলেন, “এই অনুষ্ঠান একটি
নতুন দিগন্তের সূচনা। বাংলাদেশ ১৮ কোটি মানুষের
একটি দেশ, যার অর্ধেকই ২৭ বছরের নিচে।
সরকার তাদের জন্য আন্তর্জাতিক সুযোগের দরজা খুলে দিতে কাজ করছে।”
শ্রমবাজার
প্রসঙ্গে শিজুওকার কর্মপরিবেশ উন্নয়ন সমবায়ের প্রতিনিধি পরিচালক মিতসুরু মাতসুশিতা বলেন, “অনেক জাপানি কোম্পানি এখন বাংলাদেশিদের বিষয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছে, এবং আমরা বিশ্বাস করি এই ধারা অব্যাহত
থাকবে। বাংলাদেশি তরুণদের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে— তাদের প্রতিভা বিকাশের দায়িত্ব আমাদের সবার।”
জাপানের
এনবিসিসি চেয়ারম্যান মিকিও কেসাগায়ামা বলেন, “প্রায় ১৪ বছর আগে
অধ্যাপক ইউনূস জাপানে এসে ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে নারীদের ক্ষমতায়নের কথা বলেছিলেন। আজ বাংলাদেশ আমাদের
জন্য দক্ষ ও তরুণ শ্রমশক্তির
একটি সম্ভাবনাময় উৎস হয়ে উঠেছে। আগামী পাঁচ বছরে আমরা এক লাখ বাংলাদেশিকে
স্বাগত জানাতে প্রস্তুত।”
ওয়াতামি
গ্রুপের প্রেসিডেন্ট মিকি ওয়াতানাবে জানান, বাংলাদেশে তাদের প্রতিষ্ঠিত স্কুল প্রতিবছর ১,৫০০ শিক্ষার্থীকে
প্রশিক্ষণ দেয়, যা ভবিষ্যতে ৩,০০০-এ উন্নীত করার
পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি বলেন, “কারিগরি শিক্ষা গ্রহণকারীরা জাপানের চাকরির বাজারে প্রবেশের জন্য প্রস্তুত হতে পারবে।”
জাপান
ইন্টারন্যাশনাল ট্রেইনি অ্যান্ড স্কিল্ড ওয়ার্কার কোঅপারেশন অর্গানাইজেশনের (জেইটিসিও) চেয়ারম্যান হিরোআকি ইয়াগি বলেন, “বাংলাদেশি শ্রমিকদের সম্ভাবনা রয়েছে, তবে ভাষা শিক্ষকের ঘাটতি এখনও একটি চ্যালেঞ্জ।”
জাপানের
স্বাস্থ্য, শ্রম ও কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের
প্রতিমন্ত্রী নিকি হিরোবুমি বলেন, “জাপানে জনসংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে, ফলে বাংলাদেশি শ্রমিকদের অবদান গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। এটি শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, জাপানের জন্যও একটি ইতিবাচক সম্ভাবনা।”
সেমিনারে
স্বাগত বক্তব্যে জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. দাউদ আলী বলেন, “২০৪০ সালের মধ্যে জাপানে শ্রমিক সংকট ১ কোটি ১০
লাখ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। বাংলাদেশ এই সুযোগ কাজে
লাগিয়ে আরও বেশি দক্ষ শ্রমিক প্রেরণ করতে পারে।”
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh