প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী জুলাই মাসে একটি জাতীয় সনদ প্রকাশ করাই তাদের প্রধান লক্ষ্য। সোমবার বিকেলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রথম পর্বের বৈঠকে এই মন্তব্য করেন তিনি।
বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এই বৈঠকে অংশ নেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা। বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে শুরু হওয়া বৈঠকে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “আমি সারা দিনে যত মিটিং করি, যত মিটিং করে এসেছি, তখন সবচাইতে আনন্দ পাই যখন এরকম বসার সুযোগ পাই। এখানে সবাই মিলে বাংলাদেশের প্রকৃত ভবিষ্যৎ রচনা করা হচ্ছে। এটা আমাকে শিহরণ জাগায় যে, সেই রকম কাজে আমি যুক্ত হতে পেরেছি।”
দেশে রাজনৈতিক সংস্কার ও ঐকমত্য গঠনের উদ্দেশ্যে গঠিত বিভিন্ন কমিশনের কার্যক্রমের প্রশংসা করে ড. ইউনূস জানান, “সংস্কার করার জন্য আমার ওপর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। প্রথমে বুঝতে পারছিলাম না কোথা থেকে শুরু করব। পরে সিদ্ধান্ত হলো কয়েকটি কমিশন গঠন করা হবে। তাদের ৯০ দিনের সময়সীমা দেওয়া হয়েছিল, এবং তারা সফলভাবে কাজ শেষ করেছে।”
কমিশনের রিপোর্টের ভিত্তিতে একটি ‘ঐকমত্য কমিশন’ গঠনের পেছনের ভাবনার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “কমিশন থেকে রিপোর্ট আসার পর আমরা ঐকমত্য গঠন করতে চেয়েছিলাম। তখনই আলাদা একটি ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব আসে, যা ফলপ্রসূ হয়েছে।”
দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে আশাবাদ প্রকাশ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “অনেকগুলো বিষয় কাছাকাছি এসে গেছে। আরেকটু হলে আমাদের তালিকায় আরেকটি সুপারিশ যুক্ত হবে, সেটি হবে ঐকমত্যের সুপারিশ। জুলাই সনদের যতগুলো বিষয় আছে তাতে যদি আরও কিছু যুক্ত করতে পারি, সেটা জাতির জন্য গর্বের বিষয় হবে।”
তিনি আরও যোগ করেন, “জাতি হিসেবে আমরা গর্বিত হতে পারি, কারণ আমরা বিভক্তিকরণ প্রক্রিয়ার মধ্যে রাজনীতি সৃষ্টি করিনি। আমরা দেশের উন্নতির জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করেছি।”
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এই প্রক্রিয়াকে অনেকেই রাজনৈতিক ঐক্যের নতুন যুগের সূচনা হিসেবে দেখছেন। জুলাই সনদটি কেমন হবে এবং এতে কী ধরনের নীতিগত সুপারিশ থাকছে, তা নিয়ে এখনই রাজনৈতিক মহলে কৌতূহল তৈরি হয়েছে।