ছবিঃ সংগৃহীত।
বাংলাদেশের গণমাধ্যমে বর্তমানে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রেস স্বাধীনতার অপব্যবহার—এমন মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এই উদ্বেগ জানান।
শফিকুল আলম লিখেছেন, “দেশের কিছু প্রখ্যাত পত্রিকা ও টেলিভিশন চ্যানেল প্রায়ই গুরুতর ভুল তথ্য প্রকাশ করে। অথচ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এসব ভুলের কোনো সংশোধনী প্রকাশ করা হয় না। সংশোধন করতে বাধ্য হয় তখনই, যখন সরাসরি চাপ আসে—তাও ন্যূনতম মাত্রায়।”
তিনি জানান, সম্প্রতি শেখ মুজিবুর রহমান এবং চারজন মুক্তিযোদ্ধার স্বাধীনতা সংগ্রামে ভূমিকা নিয়ে একটি ভুল তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়, যেটি দেশের অনেক সংবাদমাধ্যম যাচাই না করেই প্রকাশ করে। “ঘণ্টার পর ঘণ্টা আমরা ব্যয় করেছি ভুল সংশোধনে, অথচ অধিকাংশ মিডিয়া সেই ভুল তুলে নেয়নি, এমনকি দুঃখ প্রকাশও করেনি,” লেখেন তিনি।
একইদিন রাতে “মানবিক করিডোর” ইস্যুতে একটি জাতীয় পত্রিকার করা অনুবাদ ভুল নিয়েও শফিকুল আলম ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তার ভাষায়, “আমরা বারবার বলেছি এমন কোনো প্রস্তাব বা ঘোষণা ছিল না। তবুও তারা একটি শীর্ষ জাতিসংঘ কূটনীতিকের বক্তব্য বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে, যার ফলে সামাজিক মাধ্যমে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। নামকরা রাজনীতিবিদরাও ভুল তথ্যের ওপর ভিত্তি করে সরকারের কাছে জবাবদিহি দাবি করতে থাকেন। পরে পত্রিকাটি নিরবে রিপোর্ট থেকে ভুল অংশ সরিয়ে ফেলে, কিন্তু সংশোধনের কোনো নোট দেয়নি।”
তিনি বলেন, “ভুয়া তথ্যের ভয়াবহ বাস্তব পরিণতি রয়েছে। ২০১৭ সালের রোহিঙ্গা গণহত্যার পেছনেও ভুল তথ্য ও গুজব ভূমিকা রেখেছিল। এমনকি ২০০৯ সালের বিডিআর বিদ্রোহে ৫৭ সেনা কর্মকর্তার হত্যাকাণ্ডের পেছনেও ডাল-ভাত কর্মসূচি নিয়ে ছড়ানো গুজবের প্রভাব ছিল।”
আন্তর্জাতিক দৃষ্টান্ত টেনে শফিকুল আলম বলেন, “পশ্চিমা দেশগুলোতে ভুল তথ্য ছড়ানোর দায়ে গণমাধ্যমকে বড় অঙ্কের জরিমানা দিতে হয়। যেমন, যুক্তরাষ্ট্রে ফক্স নিউজকে ৭৮৭.৫ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে হয়েছে মিথ্যা তথ্য প্রচারের কারণে। ব্রিটেনেও নিয়মিতভাবে সংবাদমাধ্যমগুলো মানহানির মামলায় জরিমানা গুণছে।”
অপরদিকে, বাংলাদেশে ভুল তথ্য ছড়ালেও অধিকাংশ সময় গণমাধ্যম কিংবা বিশ্লেষকদের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয় না বলেও অভিযোগ করেন তিনি। “শাস্তির অভাবে কেউই আর খবর যাচাইয়ের প্রয়োজনীয়তা বোধ করে না,” বলেন শফিকুল আলম।
স্ট্যাটাসের শেষাংশে তিনি লিখেন, “যখন মিথ্যা বলার কোনো শাস্তি থাকে না, তখন কেউই আর সত্য যাচাইয়ে সময় ব্যয় করতে চায় না। এটাই আজ আমাদের সবচেয়ে বড় বিপদ।”
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh