ভারী বৃষ্টি ও ভারতের উজানের পানিতে বছর না পেরোতে ফের বন্যার কবলে পড়েছে ফেনীর পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলা। মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ২১টি স্থান ভেঙে প্রবল বেগে পানি প্রবেশ করে ডুবছে একের পর এক জনপদ। এতে বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট তলিয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন লাখো মানুষ।
আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুর ১টা থেকে বানভাসিদের উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে যোগ দিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
সেনাবাহিনীর একটি সূত্র জানায়, বন্যার্ত এলাকায় উদ্ধার কার্যক্রমের জন্য স্পিডবোট নিয়ে আসা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বন্যাকবলিত পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া এলাকায় উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করা হবে।
ছাগলনাইয়ার দক্ষিণ সতর এলাকার বাসিন্দারা বলেন, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। তীব্র স্রোতে পানি প্রবেশ করে ঘরবাড়িসহ সবকিছু তলিয়ে যাচ্ছে। গেল বছরের বন্যায় এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছিলাম। দেশে ক্ষমতা আর সরকারের পরিবর্তন হলেও আমাদের ভাগ্য কখনো পরিবর্তন হয় না।
সড়কে পানি থাকায় যানচলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। বিদ্যুৎ ও নেটওয়ার্কেও সমস্যা। এখনো শুকনো খাবার বা কোনো ধরনের প্রশাসনিক সহায়তা পাইনি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কিছু অসাধু কর্মকর্তার দায়সারা কাজের কারণে প্রতিবছর এমন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। গেল বছরের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার আগেই আবারও এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়েছে।
ফেনী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, জেলায় টানা চার দিন ধরে মাঝারি ও ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ৫০ দশমিক ৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। শুক্রবারও জেলাজুড়ে হালকা বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আবুল কাশেম বলেন, দুপুর ১টার দিকে নদীর পানি বিপৎসীমার ২ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীতে পানি কমলেও ভাঙনের স্থান দিয়ে পানি ঢুকে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। পানি কমার পরেই বাঁধ মেরামতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে ফেনীর জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, পরশুরাম, ফুলগাজী, ছাগলনাইয়া ও ফেনী সদর উপজেলায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সেনাবাহিনী উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করছে। জেলার ছয় উপজেলায় ত্রাণ কার্যক্রমের জন্য সাড়ে ১৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।