× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

চাপাতি ভাড়া থেকে জামিন, সবই মেলে ‘ছিনতাই প্যাকেজে’

ডেস্ক রিপোর্ট।

২০ জুলাই ২০২৫, ১৬:০৪ পিএম । আপডেটঃ ২০ জুলাই ২০২৫, ১৬:১২ পিএম

ছবি: সংগৃহীত

'ছিনতাই প্যাকেজে' চাপাতি ভাড়া থেকে জামিন সবই মেলে। সম্প্রতি রাজধানীর শ্যামলীর একটি ছিনতাইয়ের ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেখা যায় চাপাতি ধরে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ব্যাগ-মোবাইলের পাশাপাশি খুলে নেওয়া হয় গেঞ্জি ও জুতাও এ ছিনতাইয়ের ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে গিয়ে পুলিশ জানিয়েছে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য।

ছিনতাইয়ের এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কবির, আল আমিন ও আসলাম নামে তিনজন গ্রেফতার হয়েছেন। আসলাম ও আল আমিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। আর কবির এই ছিনতাইকারী চক্রের 'মূলহোতা'। তাদের কাছ থেকে ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও চাপাতি উদ্ধার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে গোয়েন্দা-তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ রাকিব খান বলেন, 'দুর্ধর্ষ এ ছিনতাই চক্রের রহস্য উন্মোচনে ডিবির বেশ বেগ পেতে হয়েছে। এমন ছিনতাই চক্র ঢাকায় প্রথম। যারা অগ্রিম চাপাতি আর মোটরসাইকেল ভাড়া দিয়ে ছিনতাই করায়। ছিনতাই শেষে মালামাল আবার চক্রের মূলহোতাদের কাছেই বিক্রি করতে হয়। এছাড়া কোনো সদস্য গ্রেফতার হয়ে কারাগারে গেলে জামিনের বিষয়েও টাকা-পয়সা অগ্রিম দেয় চক্রটি। এজন্য এ চক্রে অনেক সদস্য রয়েছে।'

ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন, ছিনতাই চক্রটি চাপাতি ও মোটরসাইকেল ভাড়া দেয় মাঠপর্যায়ের ছিনতাইকারীদের। প্রতিদিন ঢাকার একাধিক এলাকায় চাপাতি আর মোটরসাইকেল ভাড়া নিয়ে ছিনতাই কার্যক্রম চালায় চক্রটি। চাপাতি-মোটরসাইকেলের ভাড়া অগ্রিম পরিশোধ করতে হয় না তাদের। ছিনতাই শেষে মালামাল বিক্রির পর ভাড়া দিতে হয়। এমনকি ছিনতাইয়ের মালামাল বিক্রিও করতে হয় ছিনতাই চক্রের মূলহোতাদের কাছে। সব মিলিয়ে দেওয়া হয় এ প্যাকেজ। 

ডিবি সূত্র বলছে, এমন দুর্ধর্ষ ছিনতাইকারী চক্র এই প্রথম চিহ্নিত হয়েছে। যারা ছিনতাইয়ের জন্য চাপাতি আর মোটরসাইকেল ভাড়া দেয়।

যদি কোনো ছিনতাইকারী গ্রেফতারও হয় তখন দাদন (ব্যবসার জন্য অগ্রিম টাকা ধার, সাধারণত সুদসহ টাকা ধার দেওয়ার জন্য বেশি পরিচিত) দেয় চক্রটি। যাতে ছিনতাইকারী আসামি আদালত থেকে জামিনে বেরিয়ে আসতে পারেন। মূলত জেলেসহ বিভিন্ন ব্যবসার সঙ্গে দাদন শব্দটি পরিচিত থাকলেও ছিনতাইকারী ছাড়াতেও দাদন দেওয়ার বিষয়টি অভিনব। এবং এই দাদন নিয়েই জামিনে বেরিয়ে এসে যেন পুনর্জন্ম হয় চক্রের সদস্যদের। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের তেজগাঁও বিভাগ সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

গোয়েন্দা-তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ রাকিব খান বলেন, 'ছিনতাই চক্রটি চাপাতি আর মোটরসাইকেল ভাড়া দিয়ে ছিনতাই করায়। ছিনতাই শেষে মালামাল আবার চক্রের মূলহোতাদের কাছেই বিক্রি করতে হয়। এছাড়া কোনো সদস্য গ্রেফতার হয়ে কারাগারে গেলে জামিনের বিষয়েও টাকা-পয়সা অগ্রিম দেয় চক্রটি।'

গত ১১ জুলাই শিমিয়ন ত্রিপুরা (৩০) নামে এক ব্যক্তি রাজধানীর শ্যামলীতে সর্বস্ব ছিনতাইয়ের শিকার হন। এই ছিনতাইকারীদের গ্রেফতার করতে গিয়ে গোয়েন্দা পুলিশ এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য পায়।

যেভাবে ছিনতাই চক্রের সন্ধান মেলে

ডিবি জানায়, শ্যামলীতে ছিনতাইকারী তিনজনের প্রত্যেকের মুখে মাস্ক ও মাথায় হেলমেট ছিল। এ কারণে তাদের শনাক্ত করতে বেগ পেতে হয়েছে। এজন্য মোটরসাইকেলের নম্বর প্লেটের সূত্র ধরে শনাক্তের চেষ্টা করে ডিবি।

ঘটনাটি শ্যামলীর দুই নম্বর সড়কের মেরিগোল্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়ে। পরবর্তীসময়ে সিসি ক্যামেরার ফুটেজটি মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পরেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নড়েচড়ে বসে। এরপর সিসি ক্যামেরায় মোটরসাইকেলটি দেখে শনাক্ত করা হয় ছিনতাইকারীদের।

চাপাতি-মোটরসাইকেলের ভাড়া পরিশোধ হয় ছিনতাইয়ের পর

চাপাতি ও মোটরসাইকেলের ভাড়া পূর্বনির্ধারিত নয়। ছিনতাই করার পর মালামাল কেমন পেয়েছে তার ওপর নির্ধারণ করে ভাড়া পরিশোধ করা লাগে।

ছিনতাইয়ের জন্য চাপাতি ভাড়া নিলেও সারারাত ছিনতাই করা মালামাল জহিরের কাছে বিক্রি করা বাধ্যতামূলক। অন্য কোথাও ছিনতাইয়ের মালামাল বিক্রি করতে পারে না চক্রের সদস্যরা। সেখান থেকে ভাগ-বাটোয়ারা হয়।

প্রতিদিনই রাজধানীর কোনো না কোনো জায়গায় চাপাতি-মোটরসাইকেল ভাড়া দিয়ে ছিনতাই করাতো চক্রটি।

গ্রেফতার হলে টাকা-পয়সা দিয়ে সহায়তা করে চক্র

ছিনতাই করতে গিয়ে যদি কোনো ছিনতাইকারী পুলিশের হাতে ধরা পড়ে কারাগারে যায়, সেখানে যাবতীয় খরচ বহন করে চক্রটি।

টাকা দেওয়ার কাজে কবির সরাসরি জড়িত ছিল।

জামিন পেতে যে খরচ হয় সেই টাকা বিনামূল্যে দেওয়া হয় না। দাদন হিসেবে অগ্রিম টাকা দেওয়া হয়। জামিন পেয়ে বেরিয়ে ছিনতাই করে সেই দাদনের টাকাও পরিশোধ করতে হয় চক্রের সদস্যদের।

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.