বাংলাদেশে ফ্রান্সের নতুন রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন অভিজ্ঞ কূটনীতিক জঁ-মার্ক সেরে-শারলে। তিনি বিদায়ী রাষ্ট্রদূত মারি মাসদুপুইয়ের স্থলাভিষিক্ত হবেন। ফরাসি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
সেরে-শারলে বর্তমানে ভারতের মুম্বাইয়ে ফ্রান্সের কনসাল জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ২০২১ সালের অক্টোবর থেকে। ২০ বছরের বেশি সময় ধরে কূটনীতির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে নিয়োজিত এই ফরাসি কূটনীতিক জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ফ্রান্সের প্রতিনিধি হিসেবে ছয় বছর কাজ করেছেন। এছাড়া মস্কো, রোম, নয়াদিল্লি ও প্যারিসে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে তার বিচরণ রয়েছে। তিনি ফ্রান্সের খ্যাতনামা প্রশাসনিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইকোল ন্যাশনাল ডি’অ্যাডমিনিস্ট্রেশন-এর স্নাতক
সূত্র মতে, ‘সেরে-শারলে একজন দক্ষ ও বিচক্ষণ কূটনীতিক’। বাংলাদেশে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সংস্কারের সময়ে তিনি রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব নিচ্ছেন।বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যে ঐতিহাসিকভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী সময় থেকেই ফ্রান্স ছিল বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক অংশীদার। গণতান্ত্রিক উত্তরণ ও প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠনের চলমান প্রক্রিয়ায় ফ্রান্সের কৌশলগত ভূমিকা আরও জোরালো হয়ে উঠেছে।বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নতুন রাষ্ট্রদূতের যোগদানে দুই দেশের সম্পর্ক নতুন গতি পাবে। বিশেষ করে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ফ্রান্সের দীর্ঘদিনের ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক সম্পর্ক এই সহযোগিতায় নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে।
প্রসঙ্গত, বিদায়ী রাষ্ট্রদূত মারি মাসদুপুইয়ের সময়কালে বাংলাদেশের রাজনীতিতে বেশ উত্তাল সময় পার হয়েছে। বিরোধী দলের অভিযোগ, তিনি আগের সরকারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে কাজ করেছেন। ২০২৩ সালে একটি ভুয়া রিপোর্ট শেয়ার করায় তিনি তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন, যেটি পরে এএফপি যাচাই করে ভুয়া বলে নিশ্চিত করে।
ফ্রান্সপ্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির অনেকেই নতুন রাষ্ট্রদূতের আগমনকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাদের মতে, আমরা আগের রাষ্ট্রদূতের বিষয়গুলো পেছনে রেখে এখন সামনে এগোতে চাই। এটি হতে যাচ্ছে একটি নতুন সূচনা। বাংলাদেশ যখন একটি রাজনৈতিক রূপান্তরের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হচ্ছে, তখন সেরে-শারলের অভিজ্ঞ নেতৃত্ব ফ্রান্স–বাংলাদেশ সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে। এ সম্পর্ক হবে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং দীর্ঘস্থায়ী সহযোগিতার ভিত্তিতে গড়ে উঠা এক নতুন অধ্যায়।