পিঠে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার নিয়ে সুন্দরবন থেকে বিভিন্ন নদী ঘুরে বেড়ানো ৫টি কুমির প্রায় ১,০৪৬ কিলোমিটার নৌপথ অতিক্রম করেছে। তবে লবণাক্ত পানির প্রভাবে স্যাটেলাইট যন্ত্রপাতি বিকল হয়ে যাওয়ায় বন বিভাগ এখন আর তাদের অবস্থান শনাক্ত করতে পারছে না।
এই পাঁচ কুমির বর্তমানে কোথায় রয়েছে, কী অবস্থায় আছে—তা বন বিভাগের জানা নেই।
সুন্দরবনে কুমিরের জীবনাচরণ, চলাচলের পথ, আবাসস্থল ও সংরক্ষণ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেতে বন বিভাগ ২০২৪ সালের ১৩ মার্চ প্রথমবারের মতো দুটি কুমিরের শরীরে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার স্থাপন করে। পরে আরও তিনটি কুমিরের গায়ে ট্রান্সমিটার বসিয়ে তাদেরকে মুক্ত করে দেওয়া হয়।
বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের খুলনা অঞ্চলের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা নির্মল কুমার পাল বলেন, কুমিরের জীবনাচরণ, চলাচলের পরিসর, কতদূর পর্যন্ত তারা বিচরণ করে, এক জায়গায় কত সময় অবস্থান করে কিংবা তারা সুন্দরবনের বাইরে যায় কি না—এসব বিষয়ে আমাদের সুনির্দিষ্ট ধারণা নেই। এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই এই গবেষণার সিদ্ধান্ত হয়।
নির্মল কুমার পাল বলেন, এ গবেষণাকাজে নেতৃত্ব দিয়েছে আইইউসিএনের বাংলাদেশ দল। তাদের সহযোগিতা করছে জার্মান ফেডারেল মিনিস্ট্রি ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট। আইইউএসএনের ‘ইন্টিগ্রেটেড ম্যানেজমেন্ট অব সুন্দরবন ম্যানগ্রোভস অ্যান্ড দ্য মেরিন প্রটেকটেড এরিয়া সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ড বাংলাদেশ’ প্রকল্পের আওতায় গবেষণাটি পরিচালিত হয়।
নির্মল কুমার পাল বলেন, গবেষণার সুবিধার্থে ৫টি কুমির সংগ্রহ করে তাদের আলাদা নাম দেওয়া হয়—জুলিয়েট, মধু, পুটিয়া, জোংড়া ও হারবারিয়া। এর মধ্যে জুলিয়েট, মধু ও পুটিয়া ছিল স্ত্রী কুমির, আর হারবারিয়া ও জোংড়া ছিল পুরুষ।