বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা প্রাক্তন শিক্ষার্থী প্রকৌশলী রোকনুজ্জামান রোকনকে হত্যার হুমকির ঘটনার প্রতিবাদে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন। ব্লকেড অফ ইঞ্জিনিয়ার্স কর্মসূচির অংশ হিসেবে মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) বিকেলে শুরু হওয়া এ কর্মসূচিতে তিনটি দাবি উত্থাপন করা হয়, যা দেশের প্রকৌশল খাত সংস্কারের সঙ্গে সম্পর্কিত।
মঙ্গলবার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে হঠাৎ করেই শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা। মুহূর্তের মধ্যেই রাজধানীর অন্যতম ব্যস্ত এই সড়কটি বন্ধ হয়ে যায়। শিক্ষার্থীদের হাতে প্ল্যাকার্ড, ব্যানারে লেখা ছিল ইঞ্জিনিয়ার মানে মেধা, কোটা নয় ও প্রকৌশলীর নিরাপত্তা চাই।
শিক্ষার্থীরা জানায়, সোমবার (২৫ আগস্ট) দিনাজপুরে নেসকো কার্যালয়ে ডেকে প্রকৌশলী রোকনুজ্জামান রোকনকে (ইইই-১৭, বুয়েট) গলা কেটে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। এ ঘটনার পরই দেশব্যাপী ব্লকেড অফ ইঞ্জিনিয়ার্স কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
আন্দোলনকারীদের তিন দফা দাবি হলো
১. সরকারি চাকরিতে নবম গ্রেডে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের ৩৩ শতাংশ কোটা বাতিল করে নিয়োগে মেধা প্রাধান্য নিশ্চিত করা।
২. দশম গ্রেডে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের শতভাগ কোটা বাতিল করে পদগুলো সবার জন্য উন্মুক্ত রাখা।
৩. কেবলমাত্র বিএসসি ডিগ্রিধারীরাই ইঞ্জিনিয়ার পদবি ব্যবহার করতে পারবেন; অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ।
বুয়েট শিক্ষার্থীদের দাবি, এই সংস্কার শুধু তাদের জন্য নয়, বরং দেশের প্রকৌশল পেশাকে সুরক্ষিত করতেই জরুরি।
অবরোধস্থলে আবরার ফাহাদের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজও উপস্থিত ছিলেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি লিখেছেন, এই আন্দোলন প্রকৌশলীদের নিরাপত্তার জন্য, সাধারণ মানুষের ভোগান্তি নয়। ছয় মাস ধরে আমরা আলোচনার চেষ্টা করেছি, কিন্তু কোনো ইতিবাচক সাড়া পাইনি।
অবরোধ শেষে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল এলাকায়, যাওয়ার কথা শিক্ষার্থীদের যা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের নিকটবর্তী। সেখানে তারা অবস্থান নিবেন এবং ১২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিবে বলে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জানা যায় । তাদের দাবি দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বৃহত্তর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
তবে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো স্মারকলিপি জমা দেওয়ার তথ্য পাওয়া যায়নি। যদিও শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, প্রয়োজনে তারা সরকারের কাছে লিখিতভাবে দাবি পেশ করবেন।
বুয়েট শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন ধীরে ধীরে দেশব্যাপী প্রকৌশলীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রকৌশল অনুষদের শিক্ষার্থীরাও সংহতি জানিয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়, এখন সেটিই দেখার বিষয়।