আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য ৬০টি গাড়ি কিনতে যাচ্ছে সরকার। প্রতিটি গাড়ির দাম ধরা হয়েছে এক কোটি ৬৯ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। গাড়িগুলোর মডেল মিতসুবিশি পাজেরো কিউএক্স-২৪২৭ সিসি। ৬০টি গাড়ি কিনতে খরচ ধরা হয়েছে ১০১ কোটি ৬১ লাখ টাকা।
এছাড়া আগামী নির্বাচনে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে যারা দায়িত্ব পালন করবেন, তাদের জন্য ১৯১টি পাজেরোসহ আরও মোট ২২০টি গাড়ি কেনা হচ্ছে। সব মিলিয়ে ২৮০টি গাড়ি কিনতে সরকারের মোট ব্যয় হবে ৪৪৫ কোটি টাকা।
ইতোমধ্যে এসব গাড়ি কেনার প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
জানা গেছে, গত ২১ আগস্ট নির্বাচনী কর্মকর্তা এবং আগামী নির্বাচিত সরকারের মন্ত্রীদের জন্য ২৮০টি গাড়ি কেনার প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড থেকে সরাসরি ক্রয় প্রক্রিয়ায় এসব গাড়ি কিনবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
এরই মধ্যে মন্ত্রীদের জন্য গাড়ি কেনার সিদ্ধান্ত নিয়ে বড় ধরনের প্রশ্ন উঠেছে। অনেকেই বলছেন, পরবর্তী সরকারের মন্ত্রিসভা যে ৬০ সদস্যেরই হবে, এটা কীভাবে নির্ধারণ করল অন্তর্বর্তী সরকার।
পাশাপাশি এসব গাড়ি এখন কেন কেনা হচ্ছে, সেই প্রশ্নও উঠছে। এ বিষয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, পরবর্তী সরকার বা মন্ত্রীরা কী গাড়ি ব্যবহার করবেন, কী গাড়ি কিনবেন; তার সিদ্ধান্ত বর্তমান সরকার কেন নিচ্ছে? এটা অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নয়।
তিনি আরও বলেন, এর মাধ্যমে ব্যয়সাশ্রয়ী পদক্ষেপের পরিপত্র উপেক্ষা করা তো বটেই, একই সঙ্গে প্রশ্ন আসবে, পরবর্তী সরকারের জন্য গাড়ি কেনার দায়িত্বটা অন্তর্বর্তী সরকারকে কে দিয়েছে? অনতিবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত বাতিল করা উচিত।
অন্যদিকে আগামী নির্বাচনে সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) জন্য প্রতিস্থাপক হিসেবে ১৯৫টি মিতসুবিশি পাজেরো কিউএক্স-২৪২৭ সিসি মডেলের জিপ এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের জন্য ২৫টি মাইক্রোবাস কেনায় সম্মতি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। প্রতিটি জিপের দাম ধরা হয়েছে এক কোটি ৬৯ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। আর প্রতিটি মাইক্রোবাসের দাম পড়ছে ৫২ লাখ টাকা। এ ধরনের ২২০টি গাড়ি কিনতে সরকারকে খরচ করতে হবে ৩৪৩ কোটি ২৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা।
এদিকে চলতি অর্থবছরের বাজেটে যানবাহন অধিদপ্তরের অনুকূলে মোটরযান ক্রয় খাতে বরাদ্দ রয়েছে ৩২৮ কোটি ৩৩ লাখ ২০ হাজার টাকা। কিন্ত এই ২৮০টি গাড়ি কিনতে ব্যয় হবে ৪৪৪ কোটি ৮৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা। বাড়তি ৯৬ কোটি ৫১ লাখ ৫ হাজার টাকা যোগানের জন্য অন্য খাত থেকে অর্থ যোগানেরও অনুমোদন দিয়েছে অর্থ বিভাগ।