রাজধানীর গাবতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণ এবং ঢাকার নবাবগঞ্জে ইছামতী নদীর উপর ২৭০ মিটার ব্রিজ নির্মাণ প্রকল্পে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে দুদকের একটি এনফোর্সমেন্ট টিম এলজিইডি ঢাকা জেলা কার্যালয়ে গিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ বাচ্চু মিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। এসময় প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন নথিপত্র ও তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) আকতারুল ইসলাম জানান, ঢাকা শহর ও পূর্বাচলের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্প (দৃষ্টিনন্দন প্রকল্প) এর আওতাধীন ঢাকার মিরপুরে গাবতলী জিপিএস-এর ৬ তলা ভিত্তিসহ ৬ তলা ভবন নির্মাণ (প্যাকেজ নং ই-টেন্ডার/ডিসিজিপিএস/ডব্লিউডি-০১/২০২৩-২৪/৪৯) প্রকল্পে নির্মাণকাজ সম্পন্ন না করেও অতিরিক্ত বিল পরিশোধের অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ভবনটির মাত্র ২টি ফ্লোরের কাজ শেষ হলেও ঠিকাদারকে ৪ ফ্লোরের বিল প্রদান করা হয়েছে। দুদক টিম আংশিক রেকর্ডপত্র জব্দ করেছে এবং অবশিষ্ট নথিপত্রের জন্য চাহিদাপত্র দিয়েছে। পূর্ণাঙ্গ রেকর্ডপত্র হাতে পেলে যাচাই শেষে বিস্তারিত প্রতিবেদন কমিশনে জমা দেওয়া হবে।
একই দিনে আরেকটি অভিযানে দুদক নবাবগঞ্জের বান্দুরায় ইছামতী নদীর উপর নির্মিতব্য ২৭০ মিটার ব্রিজ পরিদর্শন করে। সেখানে ৯টি স্প্যানের মধ্যে ৮টির কাজ শেষ হলেও আর্চ স্প্যানের কাজ এখনো বাকি রয়েছে। কিন্তু অফিসের রেকর্ডে ৯৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন দেখিয়ে প্রায় ৫০ কোটি ৮৪ লাখ টাকা বিল পরিশোধ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে বলে দুদক জানায়।
নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ
এলজিইডি ঢাকা জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ বাচ্চু মিয়ার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই আর্থিক অনিয়ম, চাঁদাবাজি, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং প্রকল্পের কাজে স্থবিরতা সৃষ্টির মতো অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগ আছে, গত জুন মাসে তিনি গাবতলীর দৃষ্টিনন্দন স্কুল প্রকল্পে ৩০ কোটি টাকা, কেরানীগঞ্জ প্রকল্পে ২০ কোটি টাকা, বান্দুরা ব্রিজ প্রকল্পে ৫ কোটি টাকা কাজ শেষ না করেই বিল পরিশোধ করেছেন।
এছাড়া ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোবাইল মেইনটেনেন্স কাজ না করেই ৫০ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।