জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশন চলাকালীন নিউইয়র্কে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন কসোভোর প্রেসিডেন্ট ভিওসা ওসমানি।
গতকাল বুধবার নিউইয়র্ক শহরের একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে অভিবাসন, বাণিজ্য, ব্যবসা এবং জনগণের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক বিনিময়সহ পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
প্রেসিডেন্ট ওসমানি কসোভোকে দ্রুত ও অব্যাহতভাবে সমর্থন দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিকে স্বীকৃতি দেওয়া প্রথম দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।
তিনি কসোভোর সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক অগ্রগতির ওপর আলোকপাত করে বলেন, পরপর দ্বিতীয় বছরের জন্য দেশটি এই অঞ্চলে সর্বোচ্চ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। তিনি জানান, একটি গণহত্যার যুদ্ধের পর কসোভো সফলভাবে তার অর্থনীতিকে পুনর্গঠন করেছে এবং বর্তমানে এটি নিরাপত্তা ও আইনের শাসনের দিক থেকে ইউরোপের অন্যতম নিরাপদ দেশ হিসেবে স্থান করে নিয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ওসমানি আরও জানান, ক্রমবর্ধমান সংখ্যক বাংলাদেশি নাগরিক কসোভোতে কাজ করছেন এবং দেশটির অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন।
দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার করতে প্রেসিডেন্ট ওসমানি বাংলাদেশের সঙ্গে বেশ কয়েকটি বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক চুক্তি স্বাক্ষরের প্রস্তাব দেন। তিনি বিশেষ করে বস্ত্র খাতে একটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তির সুপারিশ করেন, যা সহযোগিতার মাধ্যমে উভয় দেশের জন্য উল্লেখযোগ্য সম্ভাবনা তৈরি করবে।
অধ্যাপক ইউনূস প্রেসিডেন্ট ওসমানিকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান এবং অর্থনৈতিক সুযোগ অনুসন্ধানের জন্য কসোভোর একটি বাণিজ্য প্রতিনিধিদলকে ঢাকায় পাঠানোর আহ্বান জানান। দুই দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলতে তিনি নিয়মিত যুব বিনিময় কর্মসূচির প্রতিও সমর্থন জানান।
বৈঠকে উপস্থিত আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বাংলাদেশি কর্মীদের নিয়োগের বিষয়ে একটি আনুষ্ঠানিক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এমন একটি চুক্তি নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করবে এবং উভয় দেশের উপকার করবে। তিনি যোগ করেন, "কসোভোর আতিথেয়তা ও উষ্ণতা নিয়ে সেখানে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীরা খুবই প্রশংসা করেছেন।"
সভায় সিনিয়র সচিব এবং এসডিজি সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদও উপস্থিত ছিলেন।