× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

মেঘনা নদীর ভাঙনে কাঁদছে হাতিয়ার মানুষ

মনিরুল ইসলাম

২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:০৫ এএম

ছবি: সংগৃহীত।

সূর্য তখন পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়েছে। গোধূলি বেলা। পাশে মেঘনা নদীর নোনাজলের গর্জন যেন এক অশুভ সংকেত। নদীর পাড়ঘেঁষা উন্মুক্ত ভিটেতে বসে আছেন পঞ্চাশোর্ধ্বা এক নারী। পাশে স্বামী ও সন্তানরা নিস্তব্ধ মুখে দাঁড়িয়ে। নারীটি হাহাকার করে কান্না করছেন। তার কান্নার শব্দে  আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। আশেপাশে আরও কিছু মহিলা জটলা বেঁধে চোখ মুছছেন।

 কাছে গিয়ে জানা গেল, স্বামী-সন্তানকে নিয়ে তিনি দীর্ঘদিন ধরে এই ভিটেতে আছেন। ঘরদোর, গাছপালা আর পারিবারিক স্মৃতি—সবই যেন এ মাটির সঙ্গে বাঁধা। কিন্তু মেঘনার ভাঙনে আজ সেই ভিটেমাটি ছেড়ে অন্যত্র পাড়ি জমাতে হচ্ছে। হয়তো আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই নদীর গর্ভে তলিয়ে যাবে তাদের শেকড়-গাড়া সংসার। তাই বিদায়ের আগে বুকভরা মায়া আর স্মৃতিকে আঁকড়ে ধরে আজ এই আর্তনাদ।

নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার ভূমিহীন বাজারের পশ্চিম প্রান্তে দাঁড়িয়ে এমনই হৃদয়বিদারক দৃশ্য চোখে পড়ল আজ। শুধু এই পরিবার নয়। এলাকার অসংখ্য মানুষ আজ গৃহহারা। চান্দনী ইউনিয়ন ও হরিণী ইউনিয়নের বড় অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের কবলে পড়ে বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি, দোকানপাট, আবাদি জমি।

নারীটির স্বামী কণ্ঠ ভারী করে বললেন, “কোথায় যাবো বলেন? মাথা গোঁজার ঠাঁই নাই। বাচ্চাগুলারে নিয়ে বেড়ির ধারে বা অন্যের ঘরে ক’দিন থাকমু। কিন্তু পরে?” তার চোখে শুধু অনিশ্চয়তা আর অসহায়ত্ব।

এলাকার মানুষজন বলছেন, বহু বছর ধরে নদীভাঙন ঠেকাতে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দা জাফর মাঝি বলেন, “সরকার যদি আগে বাঁধ দিত। তাহলে আজ এত মানুষ ভিটেমাটি হারাত না। এখন জিও ব্যাগ দেওয়া হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু তা অনেক দেরিতে।”

আজ বহু পরিবার খালি হাতে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। কেউ আত্মীয়ের ঘরে, কেউ বেড়িবাঁধের ধারে। শিশুদের কোলাহল থেমে গেছে। মায়েদের চোখে স্থায়ী অশ্রু। বাবাদের কণ্ঠে দীর্ঘশ্বাস। স্বামী-সন্তান নিয়ে সংসার গড়া মানুষগুলো আজ অনিশ্চয়তার সামনে দাঁড়িয়ে। চারপাশে কেবল শূন্যতা। ঘিরে আছে ঘোর অমানিশা। অন্ধকার ভবিষ্যৎ।

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.