বিশ্বের অন্যতম অর্থনৈতিক শক্তি জাপান আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশ থেকে এক লাখ কর্মী নেবে—সম্প্রতি স্বাক্ষরিত দুটি সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে এই সুসংবাদ মিলেছে। আরও চমকপ্রদ তথ্য হলো, নির্বাচিত কর্মীরা বিনা খরচে পাড়ি জমাতে পারবেন জাপানে। তবে এমন সুবর্ণ সুযোগের ৪ মাস পার হলেও বাংলাদেশ কতটা প্রস্তুত তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
সাম্প্রতিক জাপান সফরে নোবেল বিজয়ী ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উপস্থিতিতে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে সই হয় দুটি গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতা স্মারক। এর আওতায় নির্ধারিত হয়েছে, আগামী পাঁচ বছরে প্রতি বছর গড়ে ২০ হাজার করে মোট এক লাখ দক্ষ কর্মী পাঠানো হবে জাপানে।
সমঝোতার চার মাস পেরিয়ে গেলেও মাঠপর্যায়ে গতি তেমন নেই। নরসিংদীর মনোহরদী টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারে পরীক্ষামূলকভাবে ভাষা শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হলেও এখনো পুরোপুরি চালু হয়নি প্রশিক্ষণ কার্যক্রম।
ভাষা শেখার শুরু হবে একেবারে জিরো লেভেল থেকে, এরপর জাপানি প্রশিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে চলবে কারিগরি প্রশিক্ষণ। শর্ত কঠোর—শুধু স্পেসিফায়েড স্কিল ওয়ার্কার (SSW) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীরাই বিনা খরচে যেতে পারবেন জাপানে।
ভাইস-প্রিন্সিপাল, জাপান ড্রিম একাডেমি (নরসিংদী), শোহরাব হোসেন মোল্লা বলেন: 'আমরা সীমিত পরিসরে প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে কেন্দ্রীয়ভাবে সমন্বয়ের অভাব থাকায় জোরালো কার্যক্রম চালানো যাচ্ছে না।'
রাজধানীর বিভিন্ন টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারেও চলছে প্রস্তুতি। তবে সেটা মূলত ভাষা শিক্ষাকেন্দ্রিক। বিশ্লেষকরা বলছেন, বছরে ২০ হাজার কর্মী পাঠাতে গেলে ভাষা ও কারিগরি দক্ষতায় বিশাল প্রস্তুতির প্রয়োজন, যা এখনো দৃশ্যমান নয়।
'এই সুযোগ কাজে লাগাতে হলে দেশের প্রশিক্ষণ অবকাঠামোকে ঢেলে সাজাতে হবে। ভাষা শিক্ষার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মানের কারিগরি প্রশিক্ষণের ওপর জোর দিতে হবে'— বলেন জনশক্তি রপ্তানি বিশেষজ্ঞরা।