× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

ভারতের রাফাল ধ্বংস করা সেই যুদ্ধবিমান কিনছে বাংলাদেশ

ডেস্ক রিপোর্ট।

০৭ অক্টোবর ২০২৫, ১৮:৩৫ পিএম

ছবি: সংগৃহীত।

সম্প্রতি ভারত পাকিস্তানের সংঘাতে ব্যবহৃত হয় ফ্রান্সের ডাসোঁ এভিয়েশনের তৈরি রাফাল। এই রাফাল সবচেয়ে আধুনিক ও বিধ্বংসী যুদ্ধবিমান। সংঘাতের সময় ভারত কর্তৃক ব্যবহৃত এই যুদ্ধবিমান চীনের তৈরি জে-১০ সি ব্যবহার করে ধ্বংস করা হয়েছে বলে দাবি করে পাকিস্তান। এরপরেই বিশ্বজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রে উঠে আসে এই যুদ্ধবিমান। 

নতুন খবর হলো, এবার বাংলাদেশ সরকার চীনের কাছ থেকে ২০টি জে-১০সি মাল্টিরোল যুদ্ধবিমান কেনার উদ্যোগ নিয়েছে। বিমান বাহিনীকে আধুনিকায়ন ও জাতীয় আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করার লক্ষ্যেই এই বড় ধরনের প্রতিরক্ষা চুক্তির পথে হাঁটছে সরকার।

এই ৪.৫ প্রজন্মের যুদ্ধবিমান চীনের শীর্ষস্থানীয় প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠান ডাসেং এভিয়েশনের তৈরি। আন্তর্জাতিক মহলে যুদ্ধক্ষেত্রে রাফালের সঙ্গে পাল্লা দেওয়া এই জে-১০সি আলোচনায় আসে ২০১৯ সালে, যখন ভারত-পাকিস্তানের উত্তেজনার সময় পাকিস্তান দাবি করেছিল যে, তারা এই জেট ব্যবহার করে ভারতীয় রাফালকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে।

সরকারি নথিপত্র অনুযায়ী, প্রস্তাবিত চুক্তির আওতায় যুদ্ধবিমান, পাইলট ও কারিগরি প্রশিক্ষণ, যন্ত্রপাতি, পরিবহন, বীমা ও অন্যান্য খরচ মিলিয়ে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২২০ কোটি মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২৭,০৬০ কোটি টাকা। এ চুক্তি সরকার থেকে সরকারের (জি-টু-জি) ভিত্তিতে সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের হিসাব অনুযায়ী, প্রতিটি জে-১০সি ফাইটার জেটের প্রাথমিক মূল্য ধরা হয়েছে ৬ কোটি ডলার। ফলে ২০টি যুদ্ধবিমানের মোট দাম দাঁড়াবে ১২০ কোটি ডলার বা প্রায় ১৪,৭৬০ কোটি টাকা। বাকি ১০০ কোটি ডলারের ব্যয় হবে প্রশিক্ষণ, যন্ত্রাংশ, পরিবহন, বীমা, ভ্যাট, কমিশন ও অবকাঠামো খাতে।

এই প্রকল্পের অর্থ ১০ বছরের মধ্যে, অর্থাৎ ২০৩৫-৩৬ অর্থবছর পর্যন্ত কিস্তিতে পরিশোধ করার শর্তে কার্যকর হবে। সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো এখন বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত পর্যায়ে কাজ করছে।

এর আগে, চলতি বছরের মার্চে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস চীন সফরে যান। ওই সফরের সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিল, দুই নেতার বৈঠকে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে তিস্তা নদীর প্রকল্পে চীনের সহায়তা, মাল্টিপল রোল কমবেট এয়ারক্র্যাফট (বহুমাত্রিক জঙ্গি বিমান) কেনা, বাংলাদেশের বন্দরগুলোর সঙ্গে চীনের কুনমিংয়ের বহুমাত্রিক সংযুক্তি ইত্যাদি।

চীনের কাছ থেকে ২০টি জে-১০সি মাল্টিরোল যুদ্ধবিমান কেনার লক্ষ্যে গত এপ্রিল মাসে বিমান বাহিনীর প্রধানকে সভাপতি করে গঠিত হয়েছে ১১ সদস্যের একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি। এই কমিটি যুদ্ধবিমান ক্রয়সংক্রান্ত খসড়া চুক্তিপত্র পর্যালোচনা ও মূল্য নির্ধারণসহ যাবতীয় দর-কষাকষির দায়িত্বে রয়েছে।

সরকারি সূত্র জানায়, এই চুক্তি হবে সরকার থেকে সরকার (জি-টু-জি) পদ্ধতিতে। চুক্তিতে যুদ্ধবিমানের সংরক্ষণ সহায়তা, প্রশিক্ষণ, খুচরা যন্ত্রাংশ ব্যবস্থাপনা এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকবে। চূড়ান্ত মূল্য ও অর্থ পরিশোধের শর্ত (টার্মস অব পেমেন্ট) নির্ধারণে চীনা প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

চীনের জে-১০সি যুদ্ধবিমান মূলত দেশটির বিমানবাহিনীর ব্যবহৃত মডেলের রপ্তানি সংস্করণ। চীনের বাইই অ্যারোবেটিক টিমের বহরে যুক্ত এই জঙ্গিবিমানকে বলা হচ্ছে অন্যতম উন্নত মাল্টিরোল প্ল্যাটফর্ম, যা আধুনিক প্রযুক্তি, উচ্চগতির পারফরম্যান্স এবং দীর্ঘপথ অতিক্রমে সক্ষমতা নিয়ে আন্তর্জাতিক পরিসরে সমাদৃত। ওয়াইইউ-২০ এরিয়াল ট্যাংকারের সহায়তায় এটি আন্তর্জাতিক এয়ারশোগুলোতেও সফলভাবে অংশ নিয়েছে।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ (বিআইপিএসএস)-এর প্রেসিডেন্ট ও সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল এ এন এম মনিরুজ্জামান (অব.) এই বিষয়ে বলেন, “বিমান বাহিনীর দীর্ঘদিন ধরেই আধুনিক যুদ্ধবিমানের প্রয়োজন ছিল। এই উদ্যোগ সেই ঘাটতি পূরণে সহায়ক হবে।

তবে তিনি ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনার পরামর্শ দিয়ে বলেন, বর্তমানে বৈশ্বিক রাজনীতিতে স্পষ্ট বলয় দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে যে টানাপোড়েন চলছে, তা আমাদের মতো দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কৌশলগত প্রভাব বিশ্লেষণ জরুরি।

বর্তমানে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর (বিএএফ) বহরে রয়েছে মোট ২১২টি এয়ারক্রাফট, যার মধ্যে ৪৪টি ফাইটার জেট। এর মধ্যে ৩৬টিই চীনের তৈরি পুরনো মডেলের এফ-৭। এছাড়া বহরে রয়েছে ৮টি রাশিয়ান মিগ-২৯বি ও ইয়াক-১৩০ লাইট অ্যাটাক বিমান।

সূত্র: ইত্তেফাক

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.