ছবি: সংগৃহীত।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বিপুল পরিমাণ অর্থ আছে, যা দিয়ে তিনি বিশ্বজুড়ে নিজ স্বার্থোদ্ধারে প্রচারণা চালাতে ও দামি আইনজীবী নিয়োগ দিতে পারছেন। পিআর এজেন্সিগুলো তার জন্য সাজিয়ে রেখেছে একের পর এক সাক্ষাৎকার, যেগুলো কৌশলে ‘ইমেইলে নেওয়া’ বলে চালানো হচ্ছে।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে এসব কথা লেখেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
উগান্ডার সাবেক স্বৈরশাসক ইদি আমিনের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে ফেসবুক পোস্টে শফিকুল আলম লেখেন, নিজের জনগণের ওপর গণহত্যা চালানোর পর ১৯৭৯ সালে সৌদি আরবে পালিয়ে যান ইদি আমিন। ২০০৩ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সেখানেই নিভৃতে জীবনযাপন করেন তিনি। নির্বাসিত অবস্থায় তিনি কোনো সাক্ষাৎকার দেননি এবং খুব কমই বাসার বাইরে গেছেন। মূলত তিনি ছিলেন নিঃস্ব এক সাবেক স্বৈরশাসক। পশ্চিমা গণমাধ্যমেরও আগ্রহ ছিল না এমন এক ক্ষমতাহীন ও অর্থহীন খুনির সাক্ষাৎকার নেওয়ার প্রতি।
প্রেস সচিব লেখেন, শেখ হাসিনার হাতেও রক্ত লেগে আছে। তিনি হাজারো মানুষ হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন, প্রায় ৪ হাজার মানুষকে গুম করেছেন এবং তার ঘনিষ্ঠদের মাধ্যমে ব্যাংক লুটপাট তদারকি করেছেন। আমিনের মতোই শেষ পর্যন্ত তাকেও দেশ ছাড়তে হয়েছে। তার ক্ষেত্রে গন্তব্য ছিল নয়াদিল্লি। কিন্তু আমিনের মতো নির্বাসনে থেকেও হাসিনা নীরব থাকেননি। পার্থক্যটা কোথায়? টাকায়। হাসিনার কাছে বিপুল অর্থ আছে, যা দিয়ে তিনি বিশ্বজুড়ে পিআর প্রচারণা চালাতে ও দামি আইনজীবী নিয়োগ দিতে পারছেন। তার সহযোগীরা বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল আইন সংস্থাগুলোর একটি ভাড়া করেছে। আর পিআর এজেন্সিগুলো তার জন্য সাজিয়ে রেখেছে একের পর এক সাক্ষাৎকার, যেগুলো কৌশলে ‘ইমেইলে নেওয়া’ বলে চালানো হচ্ছে।
শফিকুল লেখেন, পশ্চিমা সাংবাদিকরা- এমনকি ভারতের চাটুকার গণমাধ্যমগুলোও নিশ্চিত নয় এই উত্তরগুলো সত্যিই হাসিনা নিজে দিচ্ছেন, নাকি তার পিআর টিম লিখে দিচ্ছে। তবুও তারা সেই কথিত ‘ইমেইল সাক্ষাৎকার’ ছাপছে। কারণ, এই পুরো নাটকটির পেছনে ব্যয় হচ্ছে কোটি কোটি টাকা, যেন হাসিনার গল্পটি টিকে থাকে।
তিনি আরও লেখেন, এটা নতুন কিছু নয়। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সাবেক প্রধান ডমিনিক স্ট্রস-কান নিউইয়র্কের এক হোটেলে এক নারীকে যৌন নিপীড়ন করার পরও কারাগারে যাননি। কারণ, তিনি বিশ্বের শীর্ষ আইন সংস্থাগুলোর একটিতে কোটি কোটি টাকা ঢেলেছিলেন। স্বৈরশাসক ও দুর্নীতিবাজদের জন্য পিআর এজেন্সি ও আইনজীবীরা তৈরি করে দেয় এক ভুয়া ‘নির্দোষতার’ চিত্র, যেখানে আইনি ভাষা ও চমকপ্রদ বিবৃতির আড়ালে চাপা পড়ে যায় নৃশংস বাস্তবতা। চিলির একনায়ক পিনোশে ইউরোপে পালিয়েও একইভাবে আইনি সুরক্ষা পেয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনিও বিচার এড়াতে পারেননি।
প্রেস সচিব লেখেন, আগামী সপ্তাহগুলোতে হাসিনার আরও ‘ইমেইল সাক্ষাৎকার’ ছাপা হবে পশ্চিমা গণমাধ্যম আর ভারতীয় বিশ্বস্ত অনুচরদের মাধ্যমে। এগুলোর কোনোটিই গুরুত্ব দেওয়ার মতো নয়। কারণ, আপনি যা পড়বেন- তা সত্য বা অনুশোচনা নয়।বরং কোটি কোটি টাকার পিআর প্রচারণার ফসল, যার উদ্দেশ্য একটাই- এক গণহত্যাকারীকে মানবিক রূপে উপস্থাপন করা।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh
