বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর দিনটির আগেও পরে দেশের অনেক অঞ্চল আলাদা-আলাদা ভাবে হানাদার মুক্ত হয়েছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতাকামী সাধারণ মানুষ দেশকে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর কব্জা থেকে স্বাধীন করতে গড়ে তোলে মুক্তিবাহিনী। এই মুক্তিবাহিনী আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
পাবনা : পাবনা জেলার সাঁথিয়া উপজেলা মুক্ত দিবস আজ ৯ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের এইদিনে সাঁথিয়া হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর দখলমুক্ত হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধারা এদিন এলাকার সর্বত্র উড়িয়েছিলেন স্বাধীন দেশের লাল-সবুজ পতাকা।
১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর সাঁথিয়ার বীর মুক্তিযোদ্ধারা একত্রিত হয়ে থানা সদর থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার পশ্চিমে নন্দনপুর এলাকায় হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে চুড়ান্ত মোকাবিলায় অবতীর্ণ হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের তীব্র আক্রমণের মুখে টিকতে না পেরে পাকিস্তানিরা পাবনা শহরে গিয়ে আশ্রয় নেয়।পরদিন ৯ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনী নতুন করে শক্তি সঞ্চয় করেও সাঁথিয়া পুনর্দখলের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়।এ অবস্থায় বীর মুক্তিযোদ্ধারা সাঁথিয়া-মাধপুর সড়কের নন্দনপুর-জোড়গাছার মধ্যবর্তী সেতুটি বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়।সেদিন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তীব্র বাঁধার মুখে পাকিস্তানি সেনারা আবারও পিছু হটতে বাধ্য হয়।পরে বীর মুক্তিযোদ্ধারা সাঁথিয়া থানা চত্বরে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন।
দাউদকান্দি : দাউদকান্দি মুক্ত দিবস ৯ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের এ দিনে কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি (বর্তমান দাউদকান্দি-মেঘনা-তিতাস উপজেলা) পাকিস্তানি হানাদার মুক্ত হয়। লঞ্চযোগে পাক সেনারা ঢাকায় পালিয়ে যায়।
মুক্তিযোদ্ধাদের প্রচন্ড আক্রমণের মুখে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পিছু হটতে শুরু করলে দাউদকান্দির মুক্তিযোদ্ধারা মানসিকভাবে দ্বিগুণ শক্তিশালী হয়ে উঠে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ইলিয়টগঞ্জ, শহিদনগর ওয়ারল্যাস কেন্দ্রে এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের দাউদকান্দিস্থ ডাক বাংলোতে অবস্থানরত পাক সেনাদের টার্গেট করে উত্তর ও দক্ষিণ পার্শ্ব হতে এক যোগে আক্রমণ শুরু করে। বৃহত্তর দাউদকান্দির মোহাম্মদপুর, ডাকখোলা, গোয়ালমারী, বাতাকান্দি প্রভৃতি এলাকার ক্যাম্প থেকে মুক্তিযোদ্ধারা অগ্রসর হতে থাকে, পূর্ব দিক হতে মিত্র বাহিনীর সহায়তায় মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণ করলে পাক সেনারা পশ্চিম দিকে হটতে থাকে।