চলনবিলের বিভিন্ন এলাকার মাঠে মাঠে সরিষা ফুল থেকে মৌমাছি দিয়ে মধু সংগ্রহে এসেছে কয়েক শতাধিক মৌ খামারি। এই মধু আহরণে একদিকে যেমন কোটি কোটি টাকা আয় হয়। তেমনি মৌমাছির মধু সংগ্রহের ফলে সরিষার উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্যদিকে দেশে মধু ও সয়াবিন তেল আমদানি ব্যয়ও কমছে।
সরেজমিনে চলনবিলের উল্লাপাড়া উপজেলার সলিয়াগাঁড়ী মাঠে দেখা যায়, আগাম সরিষার ফুলে ছেয়ে গেছে চারদিক। এর মাঝে প্রায় ৬০টির মতো মৌ বাক্স স্থাপন করেছে খামারি ইদ্রিস আলী।
তিনি জানান, এখনো মধু সংগ্রহ শুরু করেননি। সামনে সপ্তাহ থেকে তিনি মধু আহরণ করবেন। চলতি মৌসুমে তিনি প্রায় ৫ টন মধু আহরণ করবেন।ন্যাশনাল এপি কালচার ফাউন্ডেশনের সহ-সভাপতি মো: আব্দুর রশিদ জানান, তার খামারে ৩ শতাধিক মৌ বক্স আছে। প্রতি বছর তিনি উল্লাপাড়ার আলীগ্রাম মাঠ থেকে মধু সংগ্রহ করেন। এবারও একই মাঠে মধু সংগ্রহের প্রস্তুতি নিয়েছেন। এবার ১২টন মধু সংগ্রহের সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে মাঠে নেমেছেন।যা থেকে তিনি কয়েক লাখ টাকা আয় করবেন। তার মতো সরিষা মৌসুমে চলনবিল এলাকা ৫ শতাধিক মৌচাষি মধু সংগ্রহ করেন বলে তিনি উল্লেখ করেন। এসব খামারের মাধ্যমে বেকার যুবকদের যেমন কর্মসংস্থান হয়েছে তেমনি তারা প্রতি বছর সাদা সোনা খ্যাত মধু আহরণ করে কোটি কোটি টাকা আয় করছেন।
উল্লাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকতা কৃষিবিদ সুর্বণা ইয়াসমিন সুমি জানান, সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহের সময় মৌমাছির মাধ্যমে পরাগায়ন হয়। এতে সরিষার ফলন বেশি হয়। দীর্ঘদিন ধরে উল্লাপাড়ায় মৌচাষীরা মধু সংগ্রহ করে। গত বছর এ উপজেলায় ১শ’ ১০জন মৌচাষি ১২ হাজার মৌবক্স বসিয়ে ১শ’ ৬৮ টন মধু আহরণ করেছিলো। এবার তার চেয়ে বেশি মধু আহরণ হবে বলে আশা করছি। মৌ খামারিদের এই মৌসুমে সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য আমি নিজে সকল উপ-সহকারীদের নিয়ে সার্বক্ষণিক মাঠে মনিটরিং করি।
সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বাবলু কুমার সুত্রধর জানান, সিরাজগঞ্জসহ চলনবিল এলাকায় প্রতি বছর সরিষা ফুল থেকে অন্তত ৭শ’টন মধু আহরণ করা হয়। শুধু সিরাজগঞ্জ জেলায় গত বছর প্রায় ৩শ’টন মধু আহরণ করা হয়েছিলো। এবার প্রায় ৪শ’টন মধু আহরণ হবে।এই মধু সংগ্রহের ফলে পরাগায়নে সরিষার ফলন বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার কারণে বিদেশ থেকে সয়াবিন তেল এবং মধু আমাদানি কমে আসছে। এতে দেশের অর্থনৈতিক সাশ্রয় হচ্ছে। বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।