× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা জামায়াত বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

লাভের স্বপ্ন নিয়ে লবণ মাঠে চাষিরা

এএম হোবাইব সজীব, কক্সবাজার

২৯ নভেম্বর ২০২৩, ১৫:২১ পিএম

ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনায় লাভের স্বপ্ন নিয়ে লবণ চাষে মাঠে নেমেছেন চাষিরা। তার পরেও চাষিদের মুখে হতাশার চাপ। কারণ এবার এক একর চাষের জমি বর্গা নিয়েছে এক লক্ষ ২৫ হাজার থেকে এক লক্ষ ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত। লবণের নায্যামূল্য না থাকলে জমির টাকা তুলতে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

কক্সবাজারে ৬৬ হাজার ৪২৪ একর জমিতে ২০২৩–২৪ মৌসুমে প্রায় ২৫.২৮ লাখ মেট্রিক টন লবণ উৎপাদনের চাহিদার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এবারে মাঠে নেমেছে প্রায় ৩৯ হাজার ৪৮৭ জন লবণ চাষি। তবে সব চাষিদের ভয় এক জায়গায়, যদি বিদেশ থেকে লবণ আমদানী করা হয় তাহলে তারা উৎপাদিত লবণের দাম পাবে না। এতে সব আশা মাঠে মারা পড়বে এবং ক্ষতিগ্রস্ত হবে কক্সবাজারের একমাত্র স্বয়ংসম্পূর্ণ খাত লবণ শিল্প। সংশ্লিষ্টদের দাবি সরকারের উচ্চ পর্যায়ে একটি মধ্যস্বত্বভোগী ভুল বুঝিয়ে লবণ আমদানী করে দেশের চরম ক্ষতি করছে।

কক্সবাজারে এবার ধান কাটা শেষ হতে না হতেই শুরু হয়েছে লবণ চাষের কর্মযজ্ঞ। গত মাসে লবণ মৌসুম শুরুর পর থেকে বাঁশখালী ও কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় এরই মধ্যে ৯৪০ টন লবণ উৎপাদন হয়েছে। এ খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারের উচ্চ পর্যায়ে একটি মধ্যস্বত্বভোগী গোষ্ঠী ভুল বুঝিয়ে লবণ আমদানি করে দেশের চরম ক্ষতি করছে। ফলে ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিয়ে লবণচাষীদের মধ্যে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এমন শঙ্কা নিয়েই লবণ চাষ করে যাচ্ছেন তারা। 

এবারের প্রথম লবণ উৎপাদন হয়েছে বাঁশখালী ও কুতুবদিয়া উপজেলায়। এই উপকূলীয় এলাকাগুলোয় ঘূর্ণিঝড় হামুন ও মিধিলির প্রভাবে ৪০ থেমে ১০৬ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হয়েছে। ফলে লবণ উৎপাদন ও মাঠ প্রস্তুতিতে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটে। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, চাষিরা কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন। বিস্তীর্ণ এলাকায় রোদের মধ্যে কাজ করেও তাদের চেহারায় তেমন ক্লান্তির ছাপ নেই। চাষী ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাংলাদেশে লবণ উৎপাদনের ক্ষেত্র হচ্ছে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের বাঁশখালী। এসব এলাকায় উৎপাদিত লবণ দিয়ে সারা দেশের চাহিদা পূরণ করে বিদেশেও রফতানি করা সম্ভব। কিন্তু সরকারকে ভুল বুঝিয়ে লবণ আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়ার মাধ্যমে দেশীয় শিল্পের ক্ষতি করা হচ্ছে। 

জেলার মহেশখালী,টেকনাফ, কক্সবাজার সদরের খুরুশকুলসহ উপকূলীয় এলাকায় লবণচাষীদের সঙ্গে কথা হলে তারা বলছেন, দেশে যথেষ্ট পরিমাণ লবণ উৎপাদন হয়। তারাও তাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করছেন। কিন্তু তাদের দাবি, বাইরে থেকে যেন কোনোভাবেই আমদানি করা না হয়। 

প্রান্তিক চাষীরা জানান, ‘ঘূর্ণিঝড়ের আগে মাঠে নেমেছিলাম। কিন্তু পানির কারণে মাঠ উপযোগী করতে পারিনি। এরপর ১০ দিন হচ্ছে মাঠে নেমেছি। মাঠ প্রায় প্রস্তুত। তবে খালে ও মাঠে লবণপানি উপযোগী না হওয়ায় লবণ উঠতে আরো এক সপ্তাহ সময় লাগবে।’

বিসিক সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২৪ মৌসুমে দেশে লবণের চাহিদা ২৫ দশমিক ২৮ লাখ টন। মৌসুমের শুরুতে মাঠ পর্যায়ে মজুদ রয়েছে ১ দশমিক ৬০ লাখ টন। ২০২২-২৩ মৌসুমে চাহিদা ছিল ২৩ দশমিক ৮৫ লাখ টন। ওই মৌসুমে উৎপাদন হয় ২২ লাখ ৩২ হাজার ৮৯০ টন। 

২০২৩-২৪ মৌসুমে লবণের মূল্য ধরা হয়েছে মণপ্রতি ৫২৬ টাকা এবং টনপ্রতি ১৩ হাজার ১৪৬ টাকা। এছাড়া বৃহৎ লবণ কেন্দ্র রয়েছে কুতুবদিয়ার লেমশিখালী, উত্তর নলবিলা, মহেশখালীর গোরকঘাটা, মাতারবাড়ি,কালারমারছড়া, ঈদগাওর গোমাতলি, পেকুয়ার দরবেশকাটা, চকরিয়ার ডুলাহাজারা ও ফুলছড়ি, টেকনাফ, বাঁশখালীর পূর্ব বড়ঘোনায়। 

লবণ শিল্পের উন্নয়ন কার্যালয় কক্সবাজারের পরিদর্শক (উন্নয়ন) মো. ইদ্রিস আলী জানান, চাষীরা লবণ উৎপাদনে নভেম্বরের শুরু থেকে মাঠে নেমেছে। বৃষ্টি না হলে এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে তারা উপকৃত হবেন এবং লবণের বাপ্পার ফলন পাবেন। 

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.