কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে সরিষা চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকের। সরিষা চাষ করে নিজেদের ভোজ্য তেলের চাহিদা মেটাতে, কেউ আবার সরিষা চাষ করে লাভবান হওয়ায় আশায় করছেন সরিষার আবাদ। জমিতে বীজ বপনের পর বর্তমানে খেতের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। 

দিন যতই যাচ্ছে কৃষকের নিবিড় মমতায় বেড়ে ওঠা সরিষার খেত ফুলে ফুলে ছেয়ে যাচ্ছে। রাশিরাশি হলুদ ফুলের সরিষা খেত যেন হলুদের সমুদ্র। বাতাসে হলুদের ঢেউয়ে দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন।

উপজেলা কৃষি বিভাগের দাবি, উপজেলায়  সরিষার চাষাবাদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সুফল মিলেছে। আগেভাগেই ধান কেটে নিয়ে একই জমিতে এখন অনেক কৃষক সরিষা চাষাবাদ করছেন। পাশাপাশি সরিষার চাষাবাদ করে করে ভোজ্য তেলের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় উপজেলার ২ হাজার ৩২০ জন কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে সরিষা বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। গত বছর ১ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছিল। এবারে নতুন করে অনেক কৃষক সরিষা আবাদ করছেন। কৃষকদের বর্তমানে সরিষা চাষাবাদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। 

উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ফসলি জমিতে তাকাতেই চোখে পড়ছে সরিষার খেত। অন্যান্য ফসলের চেয়ে কম খরচ ও সময়ে অল্প খাটাখাটুনিতে সরিষার চাষ করে ফসল ঘরে তোলা যায়। পাশাপাশি সারাবছরই বাজারে সরিষার চাহিদা থাকে এবং ভালো দামও পাওয়া যায়। চাষাবাদ করে লাভবান হওয়া যায় বলে সরিষা চাষে আগ্রহ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন চাষিরা। 

উপজেলার সদর ইউনিয়নের শাহবাজার এলাকার কৃষক হাফিজুর রহমান জানান, তিনি এবারে তিন বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছেন। জমিচাষ, বীজ, সার, সেচ, ঔষধ ও অন্যান্য খরচসহ প্রতি বিঘায় তার প্রায় পাঁচ হাজার টাকা খরচ হবে। প্রতি বিঘা জমিতে ৫ থেকে ৬ মণ সরিষার ফলন পাওয়ার আশা করছেন তিনি। আশানুরূপ ফলন পেলে প্রতি বিঘা জমিতে সরিষা আবাদ করে তার ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা লাভ হবে। তাছাড়া একই জমিতে পরবর্তীতে কম খরচে বোরাে ধান চাষাবাদ করে লাভবান হওয়া যাবে বলেও জানান।

বড়ভিটা ইউনিয়নের উত্তর গ্রামের কৃষক আরিফুল ইসলাম ও এনামুল হক জানান, কৃষি অফিস থেকে তারা বিনামূল্যে সরিষা বীজ ও সার পেয়ে সরিষা চাষ করছেন। জমিতে বীজ বপনের পর তারা জমিতে উপরি সার প্রয়োগ ও খেতের পরিচর্যা করছেন। খেতের অবস্থা ভালো থাকায় ভালো ফলন পাবেন এমন আশা এই দুই কৃষকের।

উপজেলা কৃষি অফিসার নিলুফা ইয়াসমিন বলেন, উপজেলায় এবারে ২ হাজার ৭৬০হেক্টর জমিতে বীণা- ৪, ৯,১১, বারি- ১৪ ,১৭,১৮ জাতসহ স্থানীয় টরি-৭ ও কাজলি জাতের সরিষা চাষাবাদ হচ্ছে। গত বছরের চেয়ে এবারে ১ হাজার ১১০ হেক্টর বেশি জমিতে সরিষা চাষাবাদ হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে এবারেও কৃষকেরা সরিষার ভালো ফলন পাবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।