বদরগঞ্জ উপজেলার নাগের হাট বাজারে জমে উঠেছে ধানের চারা বিক্রির হাট। রোপা মৌসুমকে সামনে রেখে ধানের চারার হাটে সারাদিন ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁকডাক লেগেই আছে। বিভিন্ন জাতের ধানের চারা নিয়ে কৃষক ও ব্যাপারিরা হাটে আসছেন।
বদরগঞ্জ উপজেলা সহ জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে কৃষক আসেন এই হাটে ধানের চারা কিনতে। প্রতিদিন এই বাজারে প্রায় দেড় লাখ টাকার চারা বিক্রি করা হয়। স্থানীয়রা জানান, নাগেরহাটে এই ধানের চারার হাটটি বেশ পুরোনো। ক্রেতা বিক্রেতাদের পদচারণায় মুখরিত থাকে এই হাটটি। সপ্তাহে দুদিন রবিবার ও বৃহস্পতিবার এই হাটে ধানের চারা বেচা-বিক্রি হয়।
গতকাল রবিবার বাজার ঘুরে ব্যবসায়ী ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কৃষকেরা জমিতে ধান লাগানোর জন্য বোরো মৌসুমে বিভিন্ন জাতের ধানের বীজতলা তৈরি করে থাকেন। তবে অনেক সময় কৃষকদের ধানের চারা সংকট হয়। আবার অনেকে জমিতে লাগানোর পরেও ধানের চারা উদ্বৃত্ত থাকে। বীজতলায় বেশি দিন সেই চারা রাখা যায় না। এসব চারা বীজতলা থেকে তুলে এনে সহজেই নাগেরহাটে বিক্রি করছেন কৃষকেরা। আবার কেউ কেউ ব্যবসা করার জন্য বীজতলা তলা রোপণ করে থাকেন লাভের আশায়। সরাসরি কৃষকের বীজতলা থেকে চারা কিনে হাটে এনেও বিক্রি করছেন অনেকে।
সরেজমিন দেখা গেছে, ক্রেতারা বাজারে ঘুরে ঘুরে তাদের পছন্দসই ধানের চারা কিনছেন। বিক্রেতারাও তাদের চারার প্রকারভেদে দাম চাচ্ছেন। এই হাটে ধানের চারা আটি ভেদে বিক্রি করা হয়। ছোট চারার আটি প্রকারভেদে ২.৫০টাকা থেকে ৩ টাকা দরে বিক্রি করা হয়। ধানের চারা কিনতে আসা মিঠাপুকুর উপজেলার সবুর আলী বলেন, আমন মৌসুমে এই অস্থায়ী ধানের চারার বাজারটি বেশ জমজমাট হয়। আমি গত কয়েক বছর ধরে আমার দশ শতক জমিতে রোপণ করার জন্য এই বাজার থেকেই চারা কিনি। এই বাজারে ১৫ জাতের সহ ১৬ ২৮,২৯,৭৪, হাইব্রিড ধানের চারা বিক্রির জন্য নিয়ে বসেছে বিক্রেতারা।
বদরগঞ্জের কাঁচা বাড়ি এলাকার কৃষক নয়ন মিয়া ও রেজওয়ান সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁরাও গত দুই বছর ধরে আমন ও বোরো মৌসুমে নাগের হাট থেকে সরাসরি চারা কিনে জমিতে লাগিয়েছেন। তুলনামূলক কম দামে হাট থেকে চারা কিনতে পারেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
নাগেরহাটে ধানের চারা কিনতে আসা কৃষকরা বলেন, ৩০ শতক জমিতে ধানের চারা রোপন করতে খরচ হয় দুই হাজার টাকা। কিন্তু নাগের হাট বাজার থেকে ধানের চারা ৫০০ টাকায় কিনতে পারছেন। এতে করে অনেক সুবিধা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।
বাজারে চারা বিক্রি করতে আসা কুতুবপুর ইউনিয়ন জয়নাল আবেদীন ও মোফাজ্জল হোসেন বলেন, আমন মৌসুমে অস্থায়ী এই ধানের চারার হাটটি ক্রেতা-বিক্রেতাদের পদচারণায় মুখরিত থাকে। এই হাটে যে কেউ চারা বিক্রি করতে পারে।
বদরগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ গোলাম মোস্তফা জোবাইদুর রহমান বলেন, উপজেলার কৃষকেরা নাগেরহাট থেকে চারা কিনে জমিতে লাগাতে পারছেন। অনেকেই আছে আবার ব্যবসার জন্য ধানের চারা রোপন করে হাটে বিক্রি করছেন। কৃষকরা সহজেই হাট থেকে বিভিন্ন জাতের চারা কিনে জমিতে রোপণ করছে।