× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

বস্তায় আদা চাষে বাড়ছে আগ্রহ!

মো. সাইফুল ইসলাম, নীলফামারী প্রতিনিধি।

১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৯:০৬ পিএম

ছবিঃ সংগৃহীত

নীলফামারীতে বাণিজ্যিকভাবে বস্তায় আদা চাষে বেশি লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। বাড়ির আঙিনা, বাড়ির ছাদ, অনাবাদি ও পতিত জমিসহ বিভিন্ন জায়গায় বস্তায় মাটি ভরে কিংবা টবে আদা চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্র জানায়, চৈত্র থেকে বৈশাখ মাসে বস্তায় আদা রোপণ করলে পৌষ-মাঘে আদা উত্তোলন করা যায়। এ বছর জেলায় ৩ লাখ ৩২ হাজার ৭৭৫ বস্তায় আদা চাষ হচ্ছে। মসলা এবং ভেষজ ওষুধ হিসেবে আদা ব্যবহার হওয়ায় এর দামও বেশ চড়া। তাই পরিবারের প্রয়োজন মেটানোর পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবে বাড়তি লাভের আশায় বস্তায় আদা চাষ শুরু করেছেন অনেকে।

কন্দ পঁচা রোগ ও পোকামাকড়ের হাত থেকে আদা রক্ষায় নিয়মিত বিকেলে ছত্রাক নাশক ও কীটনাশক স্প্রে করতে হবে। আদা উত্তোলনের আগ পর্যন্ত প্রতি বস্তায় খরচ হয় ৫৫-৬০ টাকা। প্রতিটি বস্তায় ১-১.৫ কেজি আদা উৎপাদন হয়। এতে প্রতি বস্তায় খরচ বাদে আয় হবে ১৩৫-১৪০ টাকা।

স্বল্প পরিচর্যা ও স্বল্প খরচে বস্তায় আদা চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছে একাধিক পরিবার। এছাড়া আদা চাষে সেচ, কীটনাশক ও সার প্রয়োগসহ অন্যান্য খরচ কম হয় বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। আদা চাষ বেশি হলে আমদানি করা আদার চাহিদা অনেকটাই কমে আসবে বলে দাবি সচেতনমহলের।

জেলার বিভিন্ন উপজেলায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ বছর জেলায় ৩ লাখ ৩২ হাজার ৭৭৫ বস্তায় আদা চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে নীলফামারী সদর উপজেলায় ১ লাখ ৫ হাজার, ডোমারে ৬৫ হাজার, ডিমলায় ৬০ হাজার, কিশোরগঞ্জে ৫৮ হাজার ৪০০, জলঢাকায় ২৬ হাজার ও সৈয়দপুর উপজেলায় ১৮ হাজার ১৫০ বস্তায় আদা চাষ করা হয়েছে। সফলতা পেলে ভবিষ্যতে আদার চাষের পরিধি বাড়বে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট বিভাগ।

সদরের রামনগর এলাকার মান্না মিয়া বলেন, আমি আগে কখনো বস্তায় আদা চাষ করিনি। এবার ৯ হাজার বস্তায় চাষ করছি। বাড়ির পাশে পতিত জায়গায় চাষ করলেও তেমন কোনো রোগবালাই দেখা দেয়নি।

পলাশবাড়ী হরতকীতলার বাসিন্দা মো. মোজাম হোসেন জানান, তিনি গালামালের ব্যবসা করেন। এর পাশাপাশি বাড়ির পাশে পতিত জমিতে ১০০ বস্তায় এই প্রথম আদা চাষ শুরু করেছেন। উপজেলা কৃষি অফিসের সার্বিক পরামর্শে নিয়মিত আদা গাছ পরিচর্যা করে আসছেন। তার আশা এতে তিনি লাভবান হবেন।

আদা চাষি নুরুজ্জমান বলেন, অনলাইনে বস্তায় আদা চাষের পদ্ধতি দেখে পুকুর পাড়ের চারপাশে ২ হাজার ৫০০ বস্তায় আদা চাষ করেছি। এরই মধ্যে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছি। বর্তমানে আদার ক্ষেতের যে অবস্থা; তাতে আর্থিকভাবে লাভবান হবো।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল আহকাম সরকার বলেন, বস্তায় আদা চাষ করলে বাড়তি ফসলি জমি ও শ্রমের প্রয়োজন হয় না। বস্তার মাটি নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়। মাটির সঙ্গে গোবর সার, খৈল, ছাইসহ রাসায়নিক সার মিশিয়ে কৃষকেরা পতিত জমি কাজে লাগিয়ে বস্তায় আদা চাষ করছেন। সার-গোবর ছাড়া একটু খেয়াল ও মাঝে মাঝে পানি দিলেই আদা গাছ টিকে যাবে। আমরা কৃষককে আদা চাষে উদ্বুদ্ধ করছি। সহায়তা ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছি।

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আতিক হাসান বলেন, সদর উপজেলায় ১ লাখ ৫ হাজার বস্তায় আদা চাষ করছেন। এবার কৃষি বিভাগ থেকে বিনা মূল্যে ১৫ হাজার বস্তা সার ও কীটনাশক দেওয়া হয়েছে। কৃষকদের নতুন এ পদ্ধতিতে আদা চাষ করতে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বাড়ির আশপাশের ছায়াযুক্ত জায়গা, বাগান, পতিত স্থানে সহজেই এ পদ্ধতিতে আদা চাষ করা যায়।

নীলফামারী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. এসএম আবু বকর সাইফুল ইসলাম বলেন, জেলায় ৩ লাখ ৩২ হাজার ৭৭৫ বস্তায় আদা চাষ হয়েছে। জেলার সবগুলো উপজেলায় বর্তমানে কম-বেশি বস্তায় আদা চাষ হচ্ছে। কম খরচে আদা চাষের আগ্রহ ও পরিবারের খাদ্য চাহিদা মিটিয়ে বিপণন বাড়াতে সংশ্লিষ্ট কৃষি অফিস পরামর্শ দিয়ে আসছে। বসতবাড়ি ও অন্য ফসলের সঙ্গে সাথি ফসল হিসেবে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বস্তায় আদা চাষ। কম খরচে উৎপাদন হওয়ায় খাদ্যের চাহিদা পূরণ করে বিপণন করা সম্ভব বলে আশা করছি।

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.